ঢাকা: দেশজুড়ে চলছে শরীর হীম করা শীতল বাতাস। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ, বাড়ছে শীতের তীব্রতাও।
অধিদফতর থেকে বলা হয়েছে, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, দিনাজপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা ও বরিশাল জেলাসহ রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার (৭ জানুয়ারি) পরবর্তী আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। তবে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি থাকতে পারে।
প্রচণ্ড শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত। সর্দি, কাশি, গলাবথ্যা, হাঁপানি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, অ্যালার্জি, বিভিন্ন চর্মরোগের প্রকোপে মানুষের ভোগান্তি চরমে। এ অবস্থায় গরম নাকি ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করবেন, অনেকে ভাবনায় থাকেন। কেউ কেউ তো ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও প্রকাশ করেন। তবে, এমন বীরত্ব অনেক সময় স্বাস্থ্যগত সমস্যা সৃষ্টি করে। হতে পারে মৃত্যুও!
দেশের গ্রামাঞ্চলের লোকজন সাধারণত পুকুর, খাল, বিল বা নদীতে গোসল করেন। কেউ কেউ টিউবওয়েলের পানিতে গোসল করেন। শহুরে মানুষ গোসল করেন ট্যাংকিতে ধরে রাখা পানিতে। গরমকালে এসব মাধ্যমে গোসল করায় কোনো সমস্যা সাধারণত হয় না। কিন্তু শীতকালে পরিস্থিতি হয়ে উঠতে পারে ভয়ানক।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে পরিচালক ডা. লেনিন চৌধুরী শীত মৌসুমে ঠাণ্ডা পানির গোসল নিয়ে কিছু সতর্কতা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সবার জানা দরকার, শীতকালে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করা মোটেই স্বাস্থ্যকর কোনো বিষয় নয়। এ মৌসুমে মানব দেহের রক্তবাহী নালীগুলো কিছুটা সংকুচিত থাকে। ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করলে রক্তনালী আরও বেশি সংকুচিত হয়ে যায়। ফলে দম আটকে যাওয়া, হাঁপ ধরা, শ্বাসের সমস্যা, ক্লান্তিভাব ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ক্ষেত্র বিশেষে হার্ট অ্যাটাকের মতো দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। এতে মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে। তরুণ-যুবকদের ক্ষেত্রে এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ। কিন্তু ফেলে দেওয়া যায় না। বয়স্ক, দুর্বল, রোগাক্রান্ত ও শিশুদের শীতল পানিতে গোসল করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
ডা. লেনিন বলেন, ঠাণ্ডা পানির গোসল শিশুদের জ্বর-সর্দি, নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। তাদের ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করাই শ্রেয়। পানি বেশি গরম হলেও শরীরের জন্য ক্ষতিকর বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২৩
আরকেআর/এমজে