ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারিতে সাফল্য, মাতৃমৃত্যু নেই

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারিতে সাফল্য, মাতৃমৃত্যু নেই

চাঁদপুর: জনবল সংকটের মধ্যে প্রসূতি বিভাগে নরমাল ডেলিভারিতে প্রায় ৭০ ভাগ সাফল্য অর্জন করেছে ২৫০ শয্য বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল। মাতৃমৃত্যুর হার শূন্যের কোটায় সেখানে।

গেল বছরে ১ হাজার ৯৫২ জন নরমাল ডেলিভারি আর সিজার হয় মাত্র ৫৩৬ জন। চলতি বছরের প্রথম মাসেই ২০৫ জন নরমালডেলিভারি করাতে সক্ষম হয়েছে হাসপাতালটি। বিপরীতে সিজারে ডেলিভারির সংখ্যা ৪৩ মাত্র।

হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।

এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা নুরুদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ২০২২ সালে প্রসূতি ও গাইনি বিভাগে মৃত জন্ম হয়েছে ৬২ জন এবং নবজাতক মৃত্যুর সংখ্যা ২২। তবে মাতৃমৃত্যুর হার শূন্য।

হাসপাতালের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে নরমাল ডেলিভারি ১৪৩ জন, সিজার ৫৫ জন। ফেব্রুয়ারি মাসে নরমাল ডেলিভারি ১৪৮ জন, সিজার ৪২ জন। মার্চ মাসে নরমাল ডেলিভারি ১৪৮ জন, সিজার ৪৫ জন। এপ্রিলে নরমাল ডেলিভারি ১৬৩ জন, সিজার ৪৬ জন। মে মাসে নরমাল ডেলিভারি ১৩২ জন, সিজার ৩০ জন। জুন মাসে নরমাল ডেলিভারি ১৪৮ জন, সিজার ৪৪ জন।  

এছাড়া জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে নরমাল ডেলিভারি হয়েছে যথাক্রমে ১৬৩, ১৬০ ১৮৯, ১৭৩, ২০৪, ১৮২ জনের। আর এই পাঁচ মাসে সিজারে ডেলিভারি হয়েছে যথাক্রমে ৩১, ৫১, ৪৫, ৫৯, ৪২ এবং ৪৬টি।

এই হাসপাতালে জেলায় সবচেয়ে বেশি নরমাল ডেলিভারি হচ্ছে বলে দাবি করলেন হাসপাতালের প্রসূতি ও গাইনি বিভাগের সিনিয়র নার্স মাহমুদ আক্তার।  

তিনি বলেন, কেবল জটিলতা দেখা দিলে আমরা সিজারের সিদ্ধান্ত নিই। আর বেশিরভাগ প্রসূতিকে নরমাল ডেলিভারি করানো হচ্ছে এখানে।

একই দাবি করে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এই হাসপাতালে শুধুমাত্র চাঁদপুর জেলা নয়, শরীয়তপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার অনেক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। কাজের মাধ্যমে নার্সদের বিশেষ দক্ষতা হয়েছে। তাতে এখানে নরমাল ডেলিভারি বেশি হয়।

তবে নার্স সংকটের বিষয়টি স্বীকার করলেন তিনি। বললেন, ইউনাইটেড ন্যাশনস পপুলেশান ফান্ড (ইউএনএফএ) সংস্থা থেকে ছয়জন নার্স দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই ওই ছয় নার্স প্রসূতি ও গাইনি বিভাগে যুক্ত হবেন। তারপর আরও ভালো সেবা দেওয়া যাবে।

সরকারি এই হাসপাতালে সেবা নিতেও আসেন অসংখ্য রোগী ও প্রসূতি।

সম্প্রতি হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় নবজাতকসহ কয়েকজন মা। এর মধ্যে নবজাতককে নিয়ে ফেরার পথে কবিতা আক্তার জানান, হাসপাতালে এসে নার্সদের সেবায় সন্তুষ্ট। নরমাল ডেলিভারিতে এখানে প্রসব করানো হয় বলে তিনি এসেছেন। এখন মা ও নবজাতক সুস্থ আছেন।

হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ শাহানারা বেগম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় শিশু ভর্তি হয়েছে ১১৫ জন। এছাড়া গত পাঁচ দিনে প্রায় চারশতাধিক শিশু ভর্তি হয়েছে। নবজাতক থেকে শুরু করে তিন বছরের শিশুরা নিমোউনিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে হিমশিম খাওয়ার অবস্থা চিকিৎসক-নার্সদের।

সে বিষয়টি উল্লেখ করে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রসূতি ও গাইনি বিভাগে নতুন করে ছয়জন নার্স যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। হাসপাতালে চার বেডের আইসিও ও শিশুদের জন্য ৮ বেডের স্পেশাল কেয়ার ফর নিউব্রন ইউনিট চালু হয়। তবে এই দুটি ইউনিটের জন্য চিকিৎসক, নার্সসহ কোনো জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তারপরেও চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।