ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ডেঙ্গু চিকিৎসায় প্রস্তুত হাসপাতালগুলো: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২৩
ডেঙ্গু চিকিৎসায় প্রস্তুত হাসপাতালগুলো: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ঢাকা: দেশে ঊর্ধ্বমুখী ডেঙ্গুর সংক্রমণ। প্রতিদিনই দেশের হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

এমন অবস্থায় ভরা মৌসুমে ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হলেও তা মোকাবিলায় এবং ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য বিভাগ এবং দেশের হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।  

তিনি বলেন, আমরা দেখছি গত কিছুদিন ধরে সংক্রমণ কিছুটা বাড়ছে। তবে রোগী বাড়লেও চিকিৎসার বিষয়ে আমরা প্রস্তুত। আমাদের হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করে রাখা আছে।

বুধবার (৭ জুন) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

এ সময় জাহিদ মালেক বলেন, ডেঙ্গুতে আমরা চিকিৎসার বিষয়টি দেখি। মশা নিধন ও নিয়ন্ত্রণের কাজগুলো করে থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন। কোথায় মশা বাড়ছে, কোথায় রোগীর সংখ্যা বেশি, এসব তথ্য আমরা তাদের দিয়ে থাকি। যতটুকু জেনেছি শক্তিশালী স্প্রে আনা হয়েছে। আমরা আশা করি যদি মশা নিধন হয়, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও কমে যাবে।

তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে আমরা ডেঙ্গু চিকিৎসায় কর্নার করেছি, চিকিৎসক নার্সদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি, একসঙ্গে যা ওষুধ লাগে সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। কাজেই সেখানে আমি মনে করি কোনো সমস্যা হবে না।  

সচেতনতায় গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, যতই প্রস্তুতি নেওয়া হোক, আমাদের নিজেদেরও একটু সচেতনতার দায়িত্ব আছে। আমাদের আশপাশে ডোবানালা, ফুলের টব, পরিত্যক্ত জিনিসপত্র পরিষ্কার রাখা আমাদের দায়িত্ব। এর পাশাপাশি যদি আমরা ঠিকমতো স্প্রে করতে পারি, তাহলে এমনিতেই মশা কমে আসবে।

ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালের বিষয়ে তিনি বলেন, শুরুতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হলেও বর্তমানে সেখানে কিছু ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে এবং চিকিৎসা নিচ্ছে। যেহেতু ডেঙ্গু সংক্রমণও এখন কম, ডিএনসিসি চাইলে যেকোনো সময় আমরা হাসপাতালটি আবার তাদের কাছে হস্তান্তর করতে পারি। শুনেছি তারা সেখানে নিজস্ব হাসপাতাল তৈরির বিষয়ে পরিকল্পনা করছে। আমরা যেকোনো সময় হস্তান্তর করতে প্রস্তুত।

এ সময় স্বাস্থ্যসেবায় বিভিন্ন নতুন উদ্যোগ প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, আমরা কোভিডকালীন সময়ে টেলিমেডিসিন ব্যবহার করেছি, এখন সেটিকে ডিজিটাল সিস্টেমে নিয়ে আসা প্রয়োজন। আমাদের পুরো স্বাস্থ্যখাতকে ডিজিটালাইজড করা হবে। এরই মধ্যে ১৫০০ কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট ডিপিইতে পাস হয়েছে। এ সিস্টেমে প্রত্যেকের জন্য একটি হেলথ কার্ড থাকবে। যেকোনো জায়গায় সেই কার্ড নিয়ে চিকিৎসা নিতে পারবে। তার রোগ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষযে বিস্তারিত তথ্য কার্ডে সংরক্ষণ থাকবে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা আরেক ধাপে ৮টি বিভাগীয় হাসপাতাল করতে যাচ্ছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ হাজার বেডের কার্যক্রম অনেকদূর এগিয়েছে। আপনারা জানেন এটি একটি বড় প্রজেক্ট। তাই এর ডিজাইন ও অর্থায়ন পেতে কিছুটা সময় লেগেছে। আমরা এখন ‘ইউনিভার্সেল হেলথ কাভারেজ’ নিয়ে কাজ করছি। আমরা প্রাথমিক সেবাগুলো প্রায় বিনামূলে দেওয়া হয়। হেলথ কাভারেজের মূল শর্তই হলো বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা। মানুষকে যেন নিজ পকেট থেকে খরচ করতে না হয়।  

সম্প্রতি গণমাধ্যমে আলোচিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিয়মের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমে আলোচিত বিভিন্ন অনিয়ম-অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ কার্যক্রমসহ নানা অভিযোগই আমাদের কানে এসেছে। বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে আমরা খতিয়ে দেখবো।  

তিনি বলেন, হাসপাতালটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে। এ হাসপাতালে গুরুতর অনিয়ম আমরা হতে দিতে পারি না। তবে আপনারা জানেন বিএসএমএমইউ একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। যে কারণে এ হাসপাতালের নিয়োগ, ক্রয়-বিক্রয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তারা নিজেরাই থাকে। আমাদের সংশ্লিষ্টতা খুব বেশি থাকে না। কিন্তু হাসপাতালটিতে সরকার অর্থায়ন করে থাকে। সে হিসেবে আমরা অবশ্যই অনিয়মের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবো। আমরা চাই এখানে আসা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হোক।  

জাহিদ মালেক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষার জায়গা। এমনকি সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি এক হাজার ৩০০ কোটিরও বেশি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়েছে। যদিও নিয়োগ নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়েছে, বড় একটি নিয়োগ কিন্তু সামনে আছে। সেই নিয়োগের কমিটিতে উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ নেই। একটি শক্তিশালী কমিটি করেই সে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোরসালিন নোমানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২৩
টিএ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।