ঢাকা: রোগীর দেহের স্টেম সেল থেকে গবেষণাগারে তৈরি শিরার সফল প্রতিস্থান সম্ভব হয়েছে। শিরায় রক্ত সঞ্চালনে সমস্যায় ভোগা এক শিশুর দেহে এই কৃত্রিম শিরা প্রতিস্থাপনের পর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে শিশুটি।
সুইডেনের একদল গবেষক কৃত্রিম শিরা প্রতিস্থাপনে প্রথমবারের মতো এ সাফল্য অর্জন করেছেন। ‘দ্য ল্যানসেট’ পত্রিকার বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা।
সম্প্রতি শিরায় রক্ত সঞ্চালনজনিত পীড়ায় ভোগা দশ বছরের ওই শিশু ভর্তি হয় সুইডেনের গোটেবর্গ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে। পরীক্ষার পর দেখা যায় শিশুটির ক্ষুদ্রান্ত আর প্লীহা থেকে যকৃতের যে শিরার মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালন হয়, সেই হেপটিক পোর্টাল শিরাটি কাজ করছে না। এ সমস্যা দূর করা না গেলে শিশুটির শারীরিকভাবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সমস্যা, রক্তক্ষরণ, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
এমন ক্ষেত্রে অন্য রোগীর দেহের অংশ থেকে শিরা নিয়ে তা রক্ত সংবহনের সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর দেহে জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত এমন অস্ত্রোপচারে সাফল্যের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে জানান সুইডেনের গোটেবর্গ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের গবেষক দলের সদস্য ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুচিত্রা সুমিত্রন হোলগারসন।
তিনি গণমাধ্যমকে জানান, প্রথমে এক ব্যক্তির দেহের মেরুদণ্ড থেকে ৯ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের ইলিয়াক শিরা সংগ্রহ করা হয়। তারপর কেটে নেওয়া শিরার কোষগুলো এমন ভাবে পরিষ্কার করা হয় যাতে কেবল প্রোটিনের অবয়বটিই পড়ে থাকে।
এরপর শিশুটির দেহের অস্থিমজ্জা থেকে স্টেমসেল নিয়ে গবেষকরা তা ঢোকান ওই শিরার কোষগুলোর মধ্যে। এই অবস্থায় গবেষণাগারে দু’ সপ্তাহ রেখে দেওয়া হয় শিরাটি। পরে তা প্রতিস্থাপন করা হয় শিশুটির দেহে।
চিকিসকরা জানান, প্রথমবার অস্ত্রোপচারের পর স্বাভাবিক হয়ে যায় শিশুটির দেহের রক্ত সঞ্চালন। কিন্তু একবছর পার হবার পর আবার সমস্যা দেখা দিলে দ্বিতীয় বার একই অস্ত্রোপচার করা হয়।
চিকিৎসকিদের দাবি, দ্বিতীয় অস্ত্রোপচারের পর থেকে সর্ম্পূণ সুস্থ রয়েছে শিশুটি। তার স্বাভাবিক বৃদ্ধিও হচ্ছে। হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক সক্ষমতাও ফিরে এসেছে।
গবেষক সুচিত্রা মনে করছেন, উন্নত ‘টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর সাহায্যে শিরার মতো একদিন গবেষণাগারেই তৈরি করা যাবে ধমনী বা অন্যান্য কোষও।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৬ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১২
এআই/সম্পাদনা: আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর