ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

চিকিৎসায় কোনো অবহেলা যেন না হয়: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৩
চিকিৎসায় কোনো অবহেলা যেন না হয়: প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিএমও

ঢাকা: চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনোরকম অবহেলা না করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৬৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত আই কেয়ার সেন্টারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।

 

একই সময় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৮০টি উন্নয়ন প্রকল্প ও পুনঃখননকৃত ৪৩০টি ছোট নদী, খাল, জলাশয়সহ নতুন অনুমোদিত ২০টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উদ্বোধন করা হয়।  

সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এই প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন করেন তিনি।

এ সময় স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে সরকারের পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম তখন মানুষের ঘরের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের পদক্ষেপ নেই। আমরা প্রায় ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরি করি। দুর্ভাগ্য ২০০১ সালে সরকারে আসতে পারিনি। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসে, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়েই কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। তার কথা ছিল, এই কমিউনিটি ক্লিনিক হলে এখানে যারা চাকরি করবে, চিকিৎসাসেবা নেবে তারা সবাই নৌকা মার্কায় ভোট দেবে। নৌকায় ভোট দেবে এই আশঙ্কায় স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া বন্ধ করে দেয় তারা। এরা মানুষের কল্যাণের দিকে তাকায় না।  

তিনি বলেন, আমরা যে ঘর দিচ্ছি, কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা দিচ্ছি, এগুলো তো সব মানুষই পাচ্ছে। এখানে ধর্ম-বর্ণ দেখা হচ্ছে না, বেছে বেছে দিচ্ছি না। আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবেই দেখি। কিন্তু খালেদা জিয়াসহ এই বিএনপি-জামায়াতের চিন্তার দৈন্য আছে। এরা স্বার্থপরতায় ভোগে, মানুষের কল্যাণ চায় না।

করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মানুষকে রক্ষা করতে পেরেছি। এর জন্য অনেক টাকা আমাদের খরচ করতে হয়েছে। অনেক কাজ আমরা হাতে নিয়েও শুরু করতে পারিনি। আগামীতে সুযোগ পেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ যেমন আমরা উন্নত করব, প্রত্যেকটি জেলা, উপজেলা হাসপাতাল আরও উন্নত করব। সেখানে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জায়গায় ব্যবস্থা করে দেব। কিন্তু চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনোরকম অবহেলা না হয় সে ব্যবস্থাটা আমরা করতে চাচ্ছি। মেডিকেল কলেজ তৈরি করে দিচ্ছি, ডাক্তার নার্স তৈরি, ইতোমধ্যে প্রায় ৪০ হাজারের মতো নার্স নিয়োগ দিয়েছি, ২২ হাজারের মতো ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছি। সরকার উপজেলা পর্যায়ে  হাসপাতালগুলো আরও উন্নত করবে এবং ডাক্তার-নার্সদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াবে।  

পানিসম্পদ সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ আমরা দিয়েছি কিন্তু বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। কারণ, অনেক ভর্তুকি আমাদের দিতে হয়। যে টাকা খরচ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করি, প্রায় অর্ধেকের কম দাম ধরি। কিন্তু এভাবে বেশিদিন চলা কঠিন। ঠিক পানি ব্যবহারের বেলায়ও।  পানির অভাব নেই আমাদের। পৃথিবীর বহু দেশে পানির জন্য হাহাকার। পানিসম্পদটা সাবধানে ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে পানিসম্পদ সংরক্ষণ করে বিদেশে রপ্তানি করতে পারি, মানুষকে দিতে পারি। নদী, খাল, বিল দূষণমুক্ত রাখতে হবে। যে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করবেন এতে যে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থাটা থাকে। এই সম্পদটা হেলায় হারাবেন না। সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। খাল, বিল, নদী, নালা, হাওর, বাঁওড় সবই আমাদের রক্ষা করতে হবে। শুধু বাঁধ দেওয়া আর স্লুইসগেট করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। প্রকৃতিকে তার আপন খেয়ালে চলতে হবে। কিন্তু তার মধ্য দিয়ে আমাদের সম্পদ রক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে। ইতোমধ্যে ৯৮ ভাগ মানুষকে আমরা সুপেয় পানি দিতে সক্ষম হয়েছি। এটাও এসডিজির একটা লক্ষ্য আমরা পূরণ করেছি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৩
এসকে/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।