ঢাকা: ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনকে সফল করতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
শনিবার (০১ জুন) সকালে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) অডিটোরিয়ামে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, স্বল্প সময়ে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে। ক্যাম্পেইনকে সফল করতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেওয়া প্রয়োজন। আর তা নিশ্চিত করতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়ার সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আপনাদের লেখনি ও ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়া এ কার্যক্রমের ব্যাপক প্রচার করে আমাদের এ কার্যক্রমকে আরও সাফল্যমণ্ডিত করবেন এবং জাতিকে অন্ধত্ব ও অপুষ্টির হাত থেকে রক্ষা করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন বলে আমি আশা করছি। ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পর্যালোচনার জন্য ক্যাম্পেইনের দিন প্রতিটি উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যখাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশে অপুষ্টির হার কমেছে এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যু উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। শুধু দেশেই নয়, বিশ্ব নেতৃত্বের পুষ্টি ফোরাম Scaling Up Nutrition (SUN) এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নয়নে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী সময়ে অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুদের মধ্যে রাতকানা রোগের হার ৪ দশমিক ১০ শতাংশ ছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে রাতকানা রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রম গ্রহণ করে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো শুরু করেন। পরে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রাখার ফলে বর্তমানে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত রাতকানা রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা প্রায় নাই বললেই চলে।
জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের সফলতা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বছরে দুইবার শতকরা ৯৮ ভাগ শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ানোর ফলে অন্ধত্বের হার শতকরা একভাগের নিচে নেমে এসেছে এবং শিশু মৃত্যুর হার ও কমেছে। এই সাফল্য ধরে রাখতে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৬-৫৯ মাস বয়সী সব শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো চলমান রাখতে হবে। সেই লক্ষ্যে আজ সারা দেশে প্রায় দুই কোটি ২২ লাখ শিশুকে এক লাখ ২০ হাজার স্থায়ী ইপিআই কেন্দ্রের মাধ্যমে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দেশবাসীর কাছে আমার আবেদন একটি শিশুও যেন বাদ না পড়ে। সব শিশুকেই যেন ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। যাদের ঘরে ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু আছে সেই সব মা-বাবা এবং অভিভাবকরা যেন অবশ্যই তাদের শিশুদের নিকটস্থ কেন্দ্রে (ইপিআই টিকাদান কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ান।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও বিশ্বস্বাস্থ্য) ড. মো. জিয়াউদ্দীন, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল অনুবিভাগ) মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান এনডিসি, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (জনস্বাস্থ্য অধিশাখা) শিব্বির আহমেদ ওসমানী, নিপসম পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল হকসহ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২৪
আরকেআর/এসআইএ