শরীয়তপুর: শরীয়তপুর আধুনিক সদর হাসপাতালে ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি রোগীকে সেবা দিয়ে চলেছে চিকিৎসকরা। জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এ সদর হাসপাতালে একশ শয্যা নির্ধারিত।
বুধ ও বৃহস্পতিবার (২৪ ও ২৫ জুলাই) সরেজমিন ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য রোগীরা এসে ভিড় জমান এ হাসপাতালে। তবে জনবল সংকটের কারণে এত রোগী সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। ১৯৮৫ সালে প্রথম তলা ভবনে ৫০ শয্যা শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল নির্মাণের পরে ২০০৩ সালে তৃতীয় তলার ভবন নির্মাণের পরে ১০০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। ২০১৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে হঠাৎ করেই হাসপাতালের নিচ তলার ১৭টি স্থানের ছাদের পলেস্তারা একসঙ্গে খসে পড়ে। ফলে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সে সময়ে গণপূর্ত বিভাগ ও জেলা প্রশাসন হাসপাতালটি পরিদর্শন করার পরে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেন। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ হাসপাতালে চলছে স্বাস্থ্যসেবা।
এদিকে, পাশেই ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণকাজ ধীর গতিতে চলছে। তবে, মাস কয়েক আগে নির্মাণাধীন হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ফ্লোরটি উন্মুক্ত করে দিলেও বাকি কাজ চলছে ধীর গতিতে। এ বছরের ডিসেম্বরের আগে কোনো ভাবেই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বুঝিয়ে দিতে পারবে না এ নতুন ভবন। এ অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কাজ করার বিকল্প নেই বলছেন হাসপাতাল স্টাফ। এতে আতঙ্কিত রোগী ও রোগীর স্বজনরা।
ভেদরগঞ্জ থেকে আসা সোহেল রানা বলেন, ভেদরগঞ্জের রামভদ্রপুর থেকে এসেছি ডাক্তার দেখাতে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে থাকলেও এখনো সিরিয়াল পাইনি।
ডামুড্যা থেকে আসা আলী হোসেন বলেন, আমার মেয়ের ডায়রিয়া হওয়ায় হাসপাতালে এসেছি। কিন্তু কোনো বিছানা ফাঁকা না থাকায় বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মিতু আক্তার বলেন, আমাদের হাসপাতাল ১০০ শয্যার। কিন্তু প্রতিদিন প্রায় ৩০০-৪০০ রোগী ভর্তি হন। আমরা তাদের সেবা দিতে হিমশিম খেয়ে যাই। আউটডোরে প্রতিদিন ৫০০-৬০০ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকি। তবে জনবল সংকটও রয়েছে। তাই আমরা সংশ্লিষ্টদের কাছে জানিয়েছি, অতিদ্রুত নতুন ভবনের কাজ সম্পন্ন করা এবং জনবল সংকট নিরসন করার জন্য।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা অতিদ্রুত নির্মাণাধীন হাসপাতালটির কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারকে বলা হলেও এটি শেষ হতে আরও এক বছরের বেশি সময় লাগবে। এটি শেষ আমরা ঝুঁকিমুক্ত ভাবে সেবা নিতে পারব। পাশাপাশি সেবাগ্রহীতারাও ঝুঁকি ও শঙ্কামুক্তভাবে সেবা নিতে পারবেন। এছাড়া জনবল সংকটের কারণেও আমরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২৪
এসআরএস