ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ফরিদপুরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে অফিস ছাড়লেন সিভিল সার্জন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২৪
ফরিদপুরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে অফিস ছাড়লেন সিভিল সার্জন

ফরিদপুর: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে ছুটির কথা বলে অফিস ছেড়ে চলে গেছেন ফরিদপুরের বিতর্কিত সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান।  

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে ফরিদপুর সিভিল সার্জনের নিজ কার্যালয়ে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শাহ্ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা টিপুর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে ছুটির কথা বলে অফিস থেকে পালান এ সিভিল সার্জন।

এর আগে একইদিন সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা সিভিল সার্জনের অফিসে গিয়ে তার সময়কালের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাখ্যা চান সিভিল সার্জন ছিদ্দীকুর রহমানের কাছে। একই সাথে তার অধীন ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) গণেশ কুমার আগরওয়ালা, জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদ ও সিভিল সার্জনের প্রধান সহকারী সরদার জালাল উদ্দীনের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।  

সিভিল সার্জন ছাড়াও ওই তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার দাপটে দীর্ঘদিন একই জায়গায় চাকরি করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া রয়েছে নানা সময়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ।  

অন্যদিকে, সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমানের বিরুদ্ধেও রয়েছে সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ ফরিদপুরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে অবৈধভাবে লাইসেন্স দেওয়াসহ সেখান থেকে অর্থ আদায় ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ।  

সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমানের অফিস ত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শাহ্ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা টিপু।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘সিভিল সার্জন ছিদ্দীকুর রহমান স্যার দুপুরে আমার ওপর দায়িত্ব দিয়ে ছুটির কথা বলে অফিস ছেড়েছেন। তিনি (সিভিল সার্জন) ঢাকায় একটি ট্রেনিংয়ে যাবেন বলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি নিয়েছেন। হয়ত ঢাকা থেকে তিনি অন্য কোথাও পোস্টিং নিতে পারেন। ’

এদিকে সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমানের অফিস থেকে এভাবে পলায়নকে নিজ অপরাধকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা বলে আখ্যায়িত করেছেন ফরিদপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী আবরার নাদিম ইতু।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘সিভিল সার্জেনের কাছে তার সময়ের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম আমরা। কিন্তু, তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। এছাড়া তার অধীন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা তিনজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুপুরে মধ্যে পদত্যাগ করার আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। কিন্তু, তার কোনোকিছুর সুরাহা না করেই তিনি অফিস ছেড়ে পালিয়েছেন। এই পলায়ন প্রমাণ করে তিনি কত বড় দুর্নীতিবাজ। ’ 

ইতু আরও বলেন, ‘আমরা এ দুর্নীতিবাজ সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে আগামী সপ্তাহেই আইনগত ব্যবস্থা নেব। ’

দুর্নীতি দমন কমিশনের ফরিদপুরের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের (দুদক) উপ-পরিচালক রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরাও তাদের বিরুদ্ধে নানা সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য পাচ্ছি। তবে, এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। কারো, যদি কোনো কমপ্লেইন থাকে তবে সেটা যেন আমাদের লিখিতভাবে দেন। আমরা লিখিত কমপ্লেইন পেলে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব। ’ 

রেজাউল করিম বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা সারাদেশে এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার। তাই চাইলে তারাও আমাদের দুর্নীতির ব্যাপারে সহযোগিতা করতে পারেন। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২৪
এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।