খুলনা: বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারে রোগীদের জটলা। কাউন্টারের সামনেও অপেক্ষমাণ রোগী ও তাদের স্বজন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ৪১ চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ও কালো তালিকাভুক্ত করায় বন্ধ রয়েছে বহির্বিভাগের অধিকাংশ সেবা। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) আসেননি বহির্বিভাগের অধিকাংশ চিকিৎসক।
খুমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ডা. আক্তারুজ্জামানকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে। এ ছাড়াও ৪১ জন চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দেন কার্ডিওলোজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোস্তফা কামাল।
বুধবার নিরাপত্তা ঝুঁকিতে হাসপাতালে আসেননি অনেক চিকিৎসক। যাদের মধ্যে রয়েছেন বর্হিবিভাগের ২০২ নং রুমের প্রীতম চক্রবর্তী, ২০৯ নং রুমের ডা. হিমেল সাহা, ২০৭ নং রুমের ডা. অনিরুদ্ধ সরদার, ২০৫ নং রুমের ডা.: শেখ তাসনুভা আলম, ২০৪ নং রুমের ডা. সুব্রত কুমার মন্ডল, ২০৩ নং রুমের আরএমও ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার, ২১১ নং রুমের ডা. দীপ কুমার দাশ, ২১২ নং রুমের আরএমও ডা. সুমন রায়, ১০৩ নং রুমের ডা. তড়িৎ কান্তি ঘোষ, ৩০৮ নং রুমের ডা. নিরুপম মন্ডল, ২০৪ নং রুমের ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন, ৪১১ নং রুমের ডা. রনি দেবনাথ তালুকদার, ৪১০ নং রুমের ডা. মিথুন কুমার পাল, ৪১২ নং রুমের ডা. জিল্লুর রহমান তরুণ, ১০৫ নং রুমের চিকিৎসক শিবেন্দু মিস্ত্রিসহ প্রায় ২০ জন চিকিৎসক অনুপস্থিত। এ ছাড়া আন্তঃবিভাগের রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রার কনসালট্যান্টসহ আরও ২১ জন চিকিৎসক অনুপস্থিত।
বাগেরহাট থেকে আসা আব্দুল্লাহ নামে এক রোগী বলেন, আমরা জানতাম না মেডিকেলে চিকিৎসকরা আসেননি। জানলে কষ্ট করে এত দূর থেকে আসতাম না।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুমন রায় বলেন, মঙ্গলবার ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে তাদের দাবির বিষয়ে আলোচনার সময় ডাক্তার মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী এসে আমাদের ঘিরে ধরে। পরে তারা উপপরিচালককে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে। আর আমাদের প্রায় ৪১ জন চিকিৎসককে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে। ফলে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় আমরা আসিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দেলনের সহ-সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, অনেকেই ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাচ্ছেন। বার বার একজন ডাক্তারের নাম উঠে আসছে। তিনি হলেন কার্ডিওলোজি বিভাগের ডা. মোস্তফা কামাল। ওনাকে আমরা পাইনি। ওনার ব্যাপারেও আমরা তদন্ত করে দেখছি। কাউকে জোর করে সরিয়ে দেওয়া আমরা সমর্থন করি না। কাউকে সরাতে হলে নিয়মতান্ত্রিকভাবে তদন্ত সাপেক্ষে ধাপে ধাপে করতে হবে। একদিনেই ৪০ জনকে সরিয়ে দিলে চিকিৎসাসেবা বিঘ্নিত হবে। পুরো খুলনা বিভাগে এর প্রভাব পড়ছে। আমরা সবার সঙ্গে কথা বলছি, স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গেও কথা বলব। এখানে ২টা পার্ট রয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা। শিক্ষা পার্টের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ কাজটি করেছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগে শুধু শিক্ষার্থীদের অধিকার নেই, এখানে খুলনা বিভাগের নাগরিক ও রোগীদের অধিকারটাই বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৪
এমজেএফ