ঢাকা: রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে (ঢাকা শিশু হাসপাতাল) ভর্তি ডেঙ্গুরোগীর ৬১ শতাংশই ছেলে শিশু এবং বাকি ৩৯ শতাংশ রোগী মেয়ে শিশু। ১ অক্টোবর পর্যন্ত এই হাসাপাতালে মোট ২৫৯ ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে।
ঢাকা শিশু হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালটিতে মোট ১৩৫ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছে। এই হাসপাতালে বর্তমানে ৩৩ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি আছে।
বর্তমানে ভর্তি ডেঙ্গুরোগীর মধ্যে ক্রিটিক্যাল কেয়ার নেফ্রোলজি অ্যান্ড ডায়ালাইসিস ওয়ার্ডে ১৬ জন, পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ১৭ জন এবং রেসপারেটরি ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে সাতজন ভর্তি আছে। এছাড়াও আইসিইউতে তিনজন রোগী ভর্তি রয়েছে।
শিশু হাসপাতালের ডেঙ্গুবিষয়ক তথ্যে আরও জানা যায়, গত বছর ২০২৩ সালে এ হাসপাতালে মোট দুই হাজার ৩৩ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছিল, এর মধ্যে ২৩ জন মারা যায়।
চলতি বছরে শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে জানুয়ারি মাসে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৬ জন, মার্চে ১০ জন, এপ্রিলে ৭ জন, মে মাসে ১৩ জন, জুন মাসে পাঁচ জন, জুলাই মাসে ৩১ জন, আগস্ট মাসে ৪৫ জন এবং সেপ্টেম্বর মাসে ১৩২ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছেন। ১ জানুয়ারি থেকে ১ অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত এই হাসাপাতালে মোট ২৫৯ ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। পাশাপাশি চলতি বছরে জুন মাসে একজন, জুলাই মাসে একজন এবং সেপ্টেম্বর মাসে তিনজন ডেঙ্গুরোগীসহ মোট পাঁচজন রোগী মারা যায়।
শিশু হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গুরোগীর তথ্য থেকে জানা যায়, জানুয়ারি মাসের এক তারিখ থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত হাসাপাতালে ভর্তি মোট ২৫৯ ডেঙ্গুরোগীর মধ্যে ১৫৮ জন অর্থাৎ ৬১ শতাংশ ছেলে এবং ১০১ জন অর্থাৎ ৩৯ শতাংশ মেয়ে শিশু রয়েছে।
শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়াদের মধ্যে এক বছরের কম বয়সের শিশু ছিল ৩৪ জন, ১ থেকে ৫ বছরের মধ্যে ছিল ১১৩ জন, ৬ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ৮৫ জন এবং ১০ বছরের ঊর্ধ্বে ছিল ২৭ জন।
শিশু হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গুরোগীর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার ছিল ৩৩ জন অর্থাৎ ২০ শতাংশ এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ছিল ১২৮ জন অর্থাৎ ৮০ শতাংশ।
চলতি বছরে মোট চিকিৎসা নেওয়া ২৫৯ জন রোগীর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে ছিল ১৬১ জন, সিটি করপোরেশনের বাইরের রোগী ছিল ১৯ জন এবং অন্যান্য জেলার ছিল ৭৯ জন।
শিশুদের ডেঙ্গু রোগে থেকে নিরাপদে কীভাবে রাখা যায় জানতে চাইলে শিশু হাসপাতালের ডেঙ্গু স্পেশাল সেন্টারের রেজিস্ট্রার ডা. সাইফুল হক বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমত দিনে বা রাতে বাচ্চা যখনই ঘুমাবে মশারি টানিয়ে দিতে হবে। দ্বিতীয়ত বাড়ি বা বাড়ির আশেপাশে যেকোনো ধরনের পরিষ্কার পাত্রে যেন পানি জমা না থেকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই দুটো বিষয় লক্ষ্য রাখলেই ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, এরপরেও যদি বাচ্চাদের জ্বর হয়, তাহলে বাড়ির পাশেই কোন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাবে, যদি ডেঙ্গু পজিটিভ হয়, ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক বাসায় চিকিৎসা নিতে হবে। বাচ্চাদের যদি বিপজ্জনক লক্ষণ না থাকে যেমন, বাচ্চা দুর্বল হয়ে যাওয়া, পেট ব্যথা, পাতলা পায়খানা, বমি, প্রস্রাব কমে যাওয়া, এসব না হলে বাসায় থেকেই বেশি পরিমাণে পানি ও যেকোনো ধরনের জুস খাবে। বাসায় কোনো আইভি স্যালাইন দেবেন না। বিপজ্জনক লক্ষণ দেখা দিলে হাসপাতালে নিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২৪
আরকেআর/এএটি