কুমিল্লা: কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগ প্রমাণিতও হয়।
দুদকের মামলার পরও পদোন্নতি পাওয়া ওই কর্মচারীর নাম মো. আবুল খায়ের। তিনি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালের হিসাবরক্ষক। এর আগে তিনি হাসপাতালের স্টেনোগ্রাফার কাম কম্পিউটার অপারেটর ছিলেন। আবুল খায়ের কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার কুচাইতলি এলাকার আব্দুল হান্নানের ছেলে।
দুর্নীতি দমন কমিশন চেয়ারম্যান বরাবর এক কর্মচারীর করা লিখিত অভিযোগ ও হাসপাতাল সূত্র থেকে জানা গেছে, কুমেক হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. স্বপন কুমার অধিকারী আবুল খায়েরকে ২০১৯ সালের ১৯ মে ও ৭ আগস্ট দুই দফায় দুর্নীতির অভিযোগে কারণ দর্শানোর চিঠি দেন। তখন তিনি টেলিফোন অপারেটর ছিলেন। পরে বিষয়টি গড়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পর্যন্ত। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে একই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আবুল খায়েরকে বদলিসহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই নির্দেশ কার্যকর হয়নি। এরপরেই পদোন্নতি পেয়ে তিনি হন স্টেনোগ্রাফার কাম কম্পিউটার অপারেটর।
দুদকের সূত্র মতে, ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর ১০ লাখ ৬৫ হাজার ৫৬৬ টাকা দুর্নীতির অভিযোগে মো. আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদক কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান রুবেল মামলাটি দায়ের করেন। তখন তিনি স্টেনোগ্রাফার কাম কম্পিউটার অপারেটর ছিলেন। দুদকের মামলার পর ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর কুমেক হাসপাতালের পরিচালক বরাবর একটি নথি আসে।
দুদক প্রধান কার্যালয়ের তৎকালীন মহাপরিচালক (প্রশাসন) রেজওয়ানুর রহমান স্বাক্ষরিত নথিতে বলা হয়, স্টেনোগ্রাফার কাম কম্পিউটার অপারেটর আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুমিল্লায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এমতাবস্থায় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো। কিন্তু ব্যবস্থা গ্রহণ না করে দেওয়া হয় তাকে পদোন্নতি।
কুমেক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট আবুল খায়েরকে পদোন্নতি দিয়ে একটি অফিস আদেশ জারি করেন হাসপাতালের তৎকালীন পরিচালক ডা. শেখ ফজলে রাব্বি।
এ বিষয়ে কুমেক হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, শূন্য পদ থাকায় তাকে সাময়িক কাজ করতে বলা হয়েছিল। তার দুদকের মামলার বিষয়ে আমি জানতাম না।
অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক আবুল খায়েরের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। পরে মেসেজ দিলেও কোনো প্রতিউত্তর পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. মাসুদ পারভেজ বলেন, আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার বিষয়টি জানি। কীভাবে পূর্বের কর্মকর্তা এই চেয়ারে দিয়ে গেছেন জানি না। এই বিষয়টি আমরা দেখব।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২৪
এসএএইচ