ঢাকা: নবজাতক শিশুর মৃত্যুহার আরো কমানোর লক্ষ্যে শিগগিরই দেশে ডায়রিয়া ও নিউমেনিয়া টিকা প্রদান কর্মসূচি চালু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক। তিনি বলেছেন, ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ও ইম্যুনাইজেশন সংস্থা গ্যাভী অ্যালায়েন্স এ কর্মসূচির অনুমোদন দিয়েছে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে সোমবার ঢাকায় জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালা মিলনায়তনে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ’২০১২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তারিক-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, বাংলাদেশে ইউনিসেফ’র কান্ট্রি ডাইরেক্টর প্যাসক্যাল ভিলেন্যুভ বক্তৃতা করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, জাতির ভবিষ্যতকে সুদৃঢ় করতে একটি শিশুর গর্ভাবস্থা থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত পুষ্টি ও যথাযথ লালন পালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সরকার শিশুদেরকে প্রথম দুই বছর মায়ের দুধ পান করাতে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মা ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে বিশেষভাবে যত্নবান বলেই দেশে মাতৃত্বকালীন ভাতা বাড়ানোর পাশাপাশি মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের সকল অফিস, মার্কেটসহ যেসব জায়গায় জনসমাগম বেশি হয় সেখানে বাচ্চাদের দুধ পান করানোর সুবিধার জন্য পৃথক কর্ণার স্থাপনে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
রুহুল হক বলেন, সরকার শিশুর লৈঙ্গিক বৈষম্য দূর করে সার্বিক উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করছে। কন্যা শিশুর ভ্রণ হত্যা করার যে প্রবণতা দেশে বিরাজমান তা দূর করতে জনসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদেরকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবন্ধী শিশুদের উন্নয়নে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, অটিজমসহ শিশুর বিকাশের সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে সরকার দেশে জনমত গঠনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও কাজ করে যাচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিশুর দৈহিক, মানসিক, সামাজিক ও নৈতিক বিকাশের লক্ষ্যে সরকার দেশে একটি যুগোপযোগী শিশুনীতি প্রণয়ন করেছে। এই নীতিতে সংবিধান ও আন্তর্জাতিক সনদের আলোকে করা শিশুদের দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত হয়েছে। কন্যা শিশুদের উপবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষামুখী করা হচ্ছে।
বর্তমান সরকারের সময়ে প্রণীত শিশু শ্রমনীতির কথা তুলে ধরে শিরিন শারমীন বলেন, সরকার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাসিক এক হাজার পাঁচশ’ টাকা ভাতা প্রদান করে শিশু শ্রম বন্ধের পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আগামী এক বছরে ৫৫ হাজার শিশুকে শ্রমের কাজ থেকে প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে। এছাড়া সরকার ২০টি জেলায় ১০ হাজার পথশিশুকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১২
এমএন/ সম্পাদনা: অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর