ঢাকা: ১০ অক্টোবর বুধবার বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘বিষণ্নতা: একটি বৈশ্বিক সংকট’।
বিষণ্নতা একটি গুরুতর, কষ্টদায়ক ও কর্ম-অক্ষম করে তোলা মানসিক ব্যাধি। এর অনেক কুফলের অন্যতম হচ্ছে আত্মহত্যা।
এবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ওয়ার্ল্ড মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশন বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকট এবং তার ফলে বিষণ্নতা ও আত্মহত্যার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বর্তমানে সারা বিশ্বে ৩৫০ মিলিয়ন মানুষ বিষণ্নতায় ভুগছে। রোগের কারণে অক্ষমতা তৈরি হয় এমন রোগীদের মধ্যে ২০০৪ সাল থেকেই বিষণ্নতা তৃতীয় প্রধান কারণ বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চিহ্নিত করেছে। ২০২০ সালে এটি হবে দ্বিতীয় প্রধান কারণ এবং ২০৩০ সালে এটি হয়ে দাঁড়াবে প্রধান কারণ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিষণ্নতা একটি প্রাণঘাতী রোগ। বিষণ্নতায় ভুগলে মন অশান্তিতে ভরে থাকে, কোনো কাজ-কর্মে ন্যূনতম আগ্রহ-উৎসাহ থাকে না। বিষণ্ন ব্যক্তি দুর্বল, শক্তিহীন হয়ে পড়ে, অপরাধবোধে ভোগে বা নিজের সম্বন্ধে নিচু ধারণা তৈরি হয়, ঘুম কম হয় বা বেশি হয়, ক্ষুধা কমে যায় বা বেড়ে যায়, মনোযোগ দিতে পারে না বা সঠিকভাবে চিন্তা করতে পারে না, সর্বোপরি আত্মহত্যার চিন্তা করে, চেষ্টা করে ও অনেকে আত্মহত্যা করে। প্রতিবছর বিশ্বে ১০ লাখ লোক আত্মহত্যা করে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল জানিয়েছে, দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং শিশু-কিশোরদের ১ শতাংশ বিষণ্নতায় আক্রান্ত। বিষণ্নতার কারণে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, পেশাগত ও সামাজিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিষণ্নতা কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়, মানুষ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে।
বাংলাদেশ মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় ২০০৩ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সারা দেশে ১৮ বছরের ওপরের মানুষের মধ্যে একটি গবেষণা পরিচালিত হয়। এতে দেখা যায়, দেশের মোট জনসংখ্যার ১৬.১ শতাংশ কোনো না কোনো ধরনের মানসিক রোগে ভুগছে।
অধ্যাপক এম গোলাম রব্বানী জানান, ২০০৯-১০ সালে শিশুদের ওপর পরিচালিত পৃথক এক গবেষণায় দেখা গেছে, মোট ১৮.৪ শতাংশ শিশু-কিশোর কোনো না কোনো মানসিক সমস্যায় ভুগছে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে বিষণ্নতার হার মাত্র ১ শতাংশ।
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হবে এবং লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
বুধবার সকাল ১০টায় এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।
এছাড়া দিনটিকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া বিশেষ সিম্পোজিয়ামের শেষ দিন আজ।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১২
এমএন/এজে