খুলনা: ঢাকা সিটি করপোরেশন থেকে গ্রহণ করা ই-ট্রেড লাইসেন্স অনুযায়ী আরিয়া ট্রেডার্স নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি একটি আউটসোর্সিং জনবল সরবরাহ প্রতিষ্ঠান, প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার/কনস্ট্রাকশন ফার্ম, সব ধরনের আমদানিকারক ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।
একই নামে একটি ড্রাগ লাইসেন্স থাকলেও সেটির ইস্যুর তারিখ ২০২১ সালের ১৪ ডিসেম্বর।
এ ধরনের কাগজপত্র দিয়েই সম্প্রতি খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ ও এমএসআর সামগ্রী সরবরাহের টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে ওই প্রতিষ্ঠানটি। সব কাগজপত্র দিয়ে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা এমনকি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন একজন ঠিকাদার। এর পরও ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ওষুধ ও এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ের চক্রান্ত চলছে। স্বাস্থ্য বিভাগে মালামাল ক্রয়ের নামে এভাবে দুর্নীতি-অনিয়মের চিত্র চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। স্বাস্থ্য বিভাগের এমন দুর্নীতি-অনিয়মের কথা উল্লেখ করে গত ৮ জানুয়ারি খুলনায় স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের জন্য দেশব্যাপী অন্তর্বর্তী সরকারের চেষ্টা অব্যাহত থাকলেও বন্ধ হয়নি স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি-অনিয়ম।
জামালপুরের এম/এস সরকার এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. আসলাম হোসেন স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত বছর (২০২৪) নভেম্বর মাসে টেন্ডার আহ্বান করা হয়।
ওই টেন্ডারের আলোকে তিনি যে দরপত্র ক্রয় করেন সে দরপত্র প্রক্রিয়ায় কয়েকটি শর্তের কারণে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পিপিএ-২০০৬ ও পিপিআর-২০০৮ এর নিয়মবহির্ভুত কিছু শর্ত আরোপ করা হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এতে মোট ১১টি শর্তের কথা উল্লেখ করে প্রতিটি শর্তেই অতিরঞ্জিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আসলাম হোসেন।
লিখিত অভিযোগগুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তরে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পাঠানো হলেও এমন কোন অভিযোগ পাননি বলে উল্লেখ করেছেন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মনজুরুল মুরশিদ।
ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প: প: কর্মকর্তা ডা. জেসমিন আরা বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তার জবাবও পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অভিযোগকারী মো. আসলাম হোসেন বলেন, তিনি কোনো জবাব পাননি। তাছাড়া এখানে জবাবের কিছু নেই। প্রয়োজন টেন্ডার বাতিল করে নতুন শর্ত আরোপ করে টেন্ডার আহ্বান করা। কিন্তু দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র দাখিলকারী একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ওষুধ ও মালামাল সরবরাহের ওই কার্যাদেশ দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ওই টেন্ডারে প্রায় ২৬ লাখ টাকার ওষুধ, ১২ লাখ টাকার সার্জিক্যাল মালামাল এবং অন্য চারটি গ্রুপের প্রায় ১৪ লাখ টাকার মালামাল কেনার কথা ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের।
বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৫
এমআরএম/এএটি