ঢাকা: জাতীয় প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রেখে চিকিৎসা পেশায় বিশেষজ্ঞ তৈরি করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিএসএমএমইউর শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষায় ডিগ্রি অর্জনের লক্ষ্যে অধ্যয়নরত নবাগত রেডিডেন্ট চিকিৎসক-শিক্ষার্থীদের শপথ অনুষ্ঠানে (রেসিডেন্সি ইনডাকশন প্রোগ্রাম) প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নবাগত রেসিডেন্টদের উদ্দেশে অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, জাতীয় প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রেখে চিকিৎসা পেশায় বিশেষজ্ঞ তৈরি করতে হবে। চিকিৎসা শিক্ষায় জ্ঞান অর্জন ও চিকিৎসা সেবা দক্ষতা অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের যেকোনো হাসপাতাল ও মেডিকেল প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধার মধ্যেই অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতা প্রয়োগের সামর্থ্য অর্জন করতে হবে।
তিনি বলেন, নবাগত রেসিডেন্টদের চিকিৎসা পেশার নীতি নৈতিকতা ধারণ করতে হবে এবং রোগীদের অসন্তুষ্টি দূর করার দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। বর্তমান সময়ে যোগাযোগ বিষয়ে দক্ষতা বাড়ানো, লিডারশিপ ও টিম ম্যানেজমেন্টের গুণাবলী অর্জন করা, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করা, নতুন নতুন টেকনোলজির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করা এখন সময়েরই দাবি, যা রেসিডেন্টদের শিখতে হবে, অর্জন করতে হবে। আমার ও আমিত্বকে ভুলে গিয়ে অর্জিত জ্ঞানকে নিজের মধ্যে না রেখে বিশ্ব কল্যাণে ছড়িয়ে দিতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, মানুষের সুস্বাস্থ্যের সঙ্গে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ, পৃথিবীর সব দেশ, সব প্রাণী, পরিবেশ, পানি, বাতাস, খাদ্যসহ সমগ্র পৃথিবী যুক্ত। তাই মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে নিরাপদ পানি, নিরাপদ খাদ্য, বিশুদ্ধ বায়ূ, পর্যাপ্ত অক্সিজেন অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, তাই এসব বিষয়েও পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
রেসিডেন্সি ইনডাকশন প্রোগ্রামে সভাপতিত্ব করেন ও নবাগত রেসিডেন্টদের শপথ বাক্য পাঠ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম।
অধ্যাপক শাহিনুল আলম বলেন, চিকিৎসা পেশায় এভিডেন্স বেইসড ট্রিটমেন্ট বা প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসাবিদ্যা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে জ্ঞানের গভীরে প্রবেশ করে এভিডেন্স বেইসড চিকিৎসাবিদ্যা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক অংশগ্রহণ ও মূল্যায়নও অতীব গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষার মাধ্যমে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে। নিজেদের থিসিস ও গবেষণায় যুক্ত করে নতুন নতুন উদ্ভাবনী জ্ঞানের আলোর দুয়ার খুলে দিতে হবে। আজকের রেসিডেন্টদের মধ্যেই রয়েছে সুপ্ত জ্ঞান ও বিজ্ঞানের অফুরন্ত ভাণ্ডার। এটাকে কাজে লাগিয়ে গবেষণার মাধ্যমে রেসিডেন্টদের চিকিৎসা বিষয়ে নোবেলের মতো বিশ্বখ্যাত পুরস্কার অর্জন করা সম্ভব।
ইনডাকশন প্রোগ্রাম সঞ্চালনা করেন বিএসএমএমইউর রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ প্রমুখ।
সার্জারি অনুষদে ৫৩৭ জন, মেডিসিন অনুষদে ৩৭৫ জন, শিশু অনুষদে ১১৫ জন, বেসিক সাইন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সাইন্স অনুষদে ১৩০ জন এবং ডেন্টাল অনুষদে ৮১ জনসহ মোট ১ হাজার ২৩৮ জন রেসিডেন্ট শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৫
আরকেআর/আরআইএস