ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৩ সফর ১৪৪৭

স্বাস্থ্য

কেন কানে তালা লাগে বা বন্ধ হয়ে যায়?

স্বাস্থ্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:১৭, জুলাই ২৬, ২০২৫
কেন কানে তালা লাগে বা বন্ধ হয়ে যায়? কানে তালা লাগলে কানের পর্দার ভেতরের দিকে প্রদাহ বা ইনফেকশনের সৃষ্টি হতে পারে।

বর্ষায় গরমে অনেকেই প্রচুর ঘামছেন, কিন্তু বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকার কারণে সেই ঘাম দেরিতে শুকাচ্ছে। ঘাম যদি আমাদের শরীরেই বারবার শুকায় আর ঘামে ভেজা জামাকাপড় বেশিক্ষণ গায়ে থাকে, তাহলেই ঠান্ডা তো লাগবেই।

ঠান্ডায় কান বন্ধভাব বা তালা লেগে যাওয়ার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। এক্ষেত্রে কানে ব্যথা, ভোঁ ভোঁ শব্দ হওয়া কিংবা কানে কম শোনার সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে হাঁচি-কাশি, সর্দি, গলাব্যথা, ঠান্ডা লাগা থেকেই কানে তালা লাগার ঘটনা ঘটে।

অনেকেই বিষয়টিকে সাধারণভাবে নেন। তবে এর থেকে ঘটতে পারে মারাত্মক বিপদ। বিশেষজ্ঞদের মতে, কানে তালা লাগলে কানের পর্দার ভেতরের দিকে প্রদাহ বা ইনফেকশনের সৃষ্টি হতে পারে। যা মারাত্মক বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

মধ্যকর্ণের প্রদাহ বিভিন্ন রূপে প্রকাশ পায় যেমন- সামান্য তরল পদার্থের উপস্থিতি, পুঁজ হওয়া কিংবা মধ্যকর্ণে পুঁজ হয়ে কানের পর্দা হয়ে সেই পুঁজ কান দিয়ে বেরিয়ে আসা। এর সঙ্গে কানে ব্যথা থাকলে লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন।

কেন কানে তালা লাগে বা বন্ধ হয়ে যায়?

অডিটরি টিউব যা নাকের সঙ্গে গলা ও কানের সংযোগ স্থাপন করে। এই টিউব মধ্যকর্ণ ও আবহাওয়ার বায়ুচাপের ভারসাম্য রক্ষা করে। যদি এই টিউব বন্ধ হয়ে যায় বা ঠিকমতো কাজ না করে তখন মধ্যকর্ণে পানি জমে প্রদাহ হতে পারে।

সাধারণত হাঁচি-কাশি, সর্দি বা ঠান্ডা লাগার কারণে কানের সঙ্গে নাক ও গলার মধ্যে যোগাযোগ রক্ষাকারী টিউবটি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে সাময়িক বন্ধ থাকে। ফলে মধ্যকর্ণের সঙ্গে বাইরের পরিবেশের যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটে।

কাদের এ সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেশি?

ঘন ঘন সর্দি-কাশি-নাক বন্ধ হলে
প্রায়ই অ্যালার্জিজনিত কারণে নাকের প্রদাহ বা অ্যালার্জিক রেনাইটিস
ক্রনিক টনসিলের ইনফেকশন
শিশুদের ক্ষেত্রে নাকের পেছনে এডিনয়েড নামক লসিকাগ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়া
নাকের হাড় বাঁকা বা ক্রনিক সাইনোসাইটিসের সমস্যা
ভাইরাল ইনফেকশন ও নাকের পেছনে ন্যাসোফ্যারিংস নামক স্থানে কোনো টিউমার হলে।

কানে তালা লাগলে যে সমস্যা দেখা দেয়

মধ্যকর্ণে পানি জমা হয়ে প্রদাহ হলে সর্দি-কাশির সঙ্গে হঠাৎ কান বন্ধ হয়ে যায়।
হঠাৎ কানে বেশ ব্যথা মনে হয়।
কানের মধ্যে ফড়ফড় কিংবা ভোঁ ভোঁ শব্দ হয়।
কানে কম শোনা যায়। এ ছাড়া ইনফেকশন বেশি হলে কান বেয়ে রক্ত মিশ্রিত পানির মতো পড়ে কিংবা পুঁজ পড়ে।

এ সমস্যা দেখা দিলে জটিলতার আগেই একজন নাক-কান-গলা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এ ধরনের রোগে চিকিৎসক কান পরীক্ষার মাধ্যমে সাধারণত অ্যান্টি-হিস্টামিন; বয়স উপযোগী নাকের ড্রপ; প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করে থাকেন। পাশাপাশি ঘরোয়া কয়েকটি উপায়েও কানের বন্ধভাব দূর করতে পারবেন-

* লবণ পানিতে গার্গল করলে আপনার নাক ও কানের শ্লেষ্মা কমতে পারে। এজন্য গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে গার্গল করুন। দিনে কয়েকবার করলেই কানের সেরে যাবে।

* হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করলেও এ সমস্যায় স্বস্তি মিলবে। এ ছাড়া একটি হটব্যাগের সাহায্যে কানে ভাঁপ দিতে পারেন। এতে আপনার কানের অনুনাসিক নালীগুলো খুলে ও কানের শ্লেষ্মা নিষ্কাশন করে।

* কানে তালা লেগে থাকা ফ্লু বা অ্যালার্জির কারণে হতে পারে। বিভিন্ন খনিজ ও প্রাকৃতিক তেল যেমন- চা গাছের তেল, ইউক্যালিপটাস তেল বা পেপারমিন্ট তেল পানিতে মিশিয়ে ভাঁপ নিলেও উপকার পাবেন। এসব তেলে অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য থাকে।

বারবার চুইংগাম চিবালেও কানের তালা খুলবে দ্রুত। চিকিৎসকরাও চুইংগাম চিবানোর পরামর্শ দেন।

এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।