ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

অতিরিক্ত মানসিক চাপের প্রভাব ও বিশেষজ্ঞ মতামত

মো. আজিবুর রহমান রাজিব,কন্ট্রিবিউটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৩
অতিরিক্ত মানসিক চাপের প্রভাব ও বিশেষজ্ঞ মতামত

ঢাকা: বর্তমান যুগ হচ্ছে প্রতিযোগিতার যুগ। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সকাল থেকে ঘুমানোর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত জীবন যুদ্ধে লিপ্ত থাকতে হয়।

ফলশ্রুতিতে শরীর ও মনে বাসা বাঁধে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক এবং মানসিক চাপ বা স্ট্রেস।

এই স্ট্রেস নিয়ে কথা হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড.নাসরিন ওয়াদুদের সঙ্গে।

প্রফেসর ড.নাসরিন ওয়াদুদ জানালেন, অতিরিক্ত শারীরিক অথবা মানসিক পরিশ্রমে আমরা যে মানসিক অবস্থা অনুভব করি তাই হচ্ছে মানসিক চাপ বা স্ট্রেস। এই চাপ আসতে পারে বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উভয় দিক থেকেই। আসলে মানসিক চাপ একটি স্বাভাবিক ব্যাপার যা সব বয়সের মানুষের মধ্যেই থাকে।    

আবার মানসিক চাপ সব সময় খারাপও না। বরং অল্প কিছু মানসিক চাপ থাকা ভালো। মানসিক চাপের জন্যই আমরা কর্মক্ষেত্রে, পড়াশোনায় কিংবা খেলাধুলায় ভালো করার চেষ্টা করে থাকি।

তবে স্বাভাবিক মানসিক অবস্থা যেমন আমাদের সাফল্য এনে দিতে পারে তেমনি অতিরিক্ত মানসিক চাপ আমাদের মাঝে হতাশা এবং ডিপ্রেশনের জন্ম দিতে পারে।

অতিরিক্ত মানসিক চাপ আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করে অটোনোমিক নার্ভাস সিস্টেম। অতিরিক্ত মানসিক চাপ অটোনোমিক নার্ভাস সিস্টেমের স্বাভাবিক কাজে বিঘ্ন ঘটায়।

অতিরিক্ত মানসিক চাপের বেশ কিছু উপসর্গ রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো নিজেকে অপরাধী ভাবা, ক্লান্তি বোধ করা, মাথা ব্যথা, ঘুমের সমস্যা, কারণ ছাড়া হাসি বা কান্না।

নিজের দোষ অন্যের ওপর চাপানোর চেষ্টা করা। যেকোন বিষয়ের খারাপ দিক খুঁজে বের করা। কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, মোটা হওয়া বা শুকিয়ে যাওয়া। উচ্চ রক্তচাপ, ঘন ঘন নিঃশ্বাস নেওয়া। হজম শক্তি কমে যাওয়া প্রভৃতি।

মানসিক চাপ মোকাবেলায় আমাদের নিয়মিতভাবে সুষম খাবার খাওয়ার পাশাপাশি চা ও কফি কম খেতে হবে। প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুমেরও।

এছাড়া কাজের চাপ নিতে হবে আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী। মাঝে মাঝে কাজে বিরতি দিয়ে মন খুলে আনন্দ করতে হবে বা বাইরে কোথাও থেকে ঘুরে আসতে হবে। এমন কাজের ওয়াদা করা যাবে না, যা আমাদের সামর্থে্যর বাইরে বা ইচ্ছার বিরোধী।

নিজের সমস্যাগুলোর ব্যাপারে বিশ্বস্ত কারও সাথে মনখুলে কথা বলার পাশাপাশি তার সঙ্গে শেয়ার করা যেতে পারে সমস্যাগুলোও। পাশাপাশি যে কোন কাজকে স্বাভাবিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া ও ভয় না পাওয়ার মাধ্যমে মানসিক চাপ নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

মানসিক চাপ থেকে মুক্তির জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ড্রাগ বা অ্যালকোহলের আশ্রয় নিয়ে থাকেন, যা চূড়ান্তভাবে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ড্রাগ বা অ্যালকোহল আসলে মানসিক চাপ মোকাবেলায় সাহায্য না করে আমাদের ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৩
আরআই/জিসিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।