ঢাকা: জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে। মৃত্যু নিয়ে কল্পকাহিনীর শেষ নেই।
তবে সম্প্রতি একদল গবেষক ‘কিছুটা’ হলেও মানুষের আগাম মৃত্যুর দিনক্ষণ বলে দিতে পারেন এমন একটি পদ্ধতি বের করেছেন। দরকার শুধুমাত্র একটি রক্ত পরীক্ষা।
গবেষকরা দাবি করছেন, রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে মানুষ জানতে পারবে তার মৃত্যুর দিনক্ষণ। পরবর্তী পাঁচ বছরে কোনো রোগে মৃত্যু ঝুঁকি আছে কিনা জানা যাবে এই পরীক্ষার মাধ্যমে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভির খবরে বলা হয়, রক্তের নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রিজনেন্স (এনএমআর) স্পেকট্রোসকপি পরীক্ষায় দুই শতাধিক বায়োমার্কার (জীবের অস্তিত্ব নির্ধারক) মাধ্যমে এ তথ্য জানা যাবে।
ফিনল্যান্ডের ওলু ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মিকা আলা-করপেলা বলেন, বায়োমার্কারের ভিত্তিতে যদি কেউ ‘রিস্ক গ্রুপে’ পড়েন তাহলে পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে আর দশ জনের তুলনায় তার মৃত্যু ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।
গবেষণাটি মেডিকেল ভিত্তিক সাপ্তাহিক জার্নাল পিএলওএস জার্নালে প্রকাশিত হয়।
১৭ হাজার ফিনিশ এবং এস্তোনিয়ান অধিবাসীর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে এই গবেষণাটি চালানো হয়। রক্তের ওপর ভিন্ন ভিন্ন শতাধিক জৈবআনবিক (বায়োমলিকিলস) পরীক্ষা চালানো হয়। বেশ কয়েক বছর ধরে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
গবেষণায় বলা হয়, কারো মৃত্যু সম্ভাবনা রক্তের চারটি বায়োমার্কারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আলবুমিন এবং আলফা-১ এসিডিক গ্লাইসোপ্রোটিন, লিপিড মেটাবোলিজম এবং সাইট্রিক এসিড। এসব উপাদান প্রতিটি মানুষের রক্তেই বিদ্যমান। কিন্তু কি মাত্রায় আছে সেটি গুরুত্বপূর্ণ। মাত্রা বেড়ে গেলে মানুষের মৃত্যঝুঁকিও বেড়ে যায়।
মানুষের বয়স, ধূমপান, অ্যালকোহলের ব্যবহার, কোলেস্টেরল, স্থুলতা এবং রক্তচাপ এ চারটি বায়োমার্কারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়।
ইউনিভার্সিটি অব ইস্টার্ন ফিনল্যান্ড এনএমআর মেটাবোলোমিকস ল্যাবরেটরির প্রধান পাসি সনিনেন জানান, এই ধরনের গবেষণা এটাই বিশ্বে প্রথম। ক্লিনিক্যালি প্রয়োগের জন্য আরো গবেষণার প্রয়োজন।
নতুন এই রক্ত পরীক্ষা পদ্ধতি আগামীতে মানুষের মৃত্যু সম্ভাবনা নিরূপনে আশা জাগিয়েছে। এটি জানতে পারলে সে অনুযায়ী চিকিৎসাও নিতে পারবেন যে কেউ। যদিও সম্প্রতি এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিকস এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৬ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৪