ঢাকা: লিফটে ওঠাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শহিদুল্লাহ হলের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় জরুরি বিভাগে চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট বন্ধ করে দিয়ে পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা।
এতে বিপাকে পড়ে গেছেন দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মুমূর্ষু রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে গেট ভেঙে রোগীবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্স ভেতরে প্রবেশ করলে অ্যাম্বুলেন্সের চালককে মারধর করেন আনসার সদস্যরা। এরপর ফের গেটটি আটকে দেওয়া হয়।
সায়েদাবাদের শিশু নিঝুম(৫)। রান্নাঘরের বটির ওপর পড়ে দিয়ে তার কপালের অনেকাংশ কেটে গেছে। কিন্তু তাকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটে প্রবেশ করতে দেননি কর্তব্যরত আনসার প্লাটুন কমান্ডার আব্দুল খালেক।
গরম ডালে শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যাওয়া ইভাকে (৫) শরিয়তপুর থেকে চিকিৎসা দিতে নিয়ে এসেছেন তার বাবা রফিক। তাকেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি সেখানে। মেয়ের চিকিৎসা করাতে না পেরে রফিক বলেন, শুনেছি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই আগুনে পোড়া রোগীর চিকিৎসা হয়। পোড়া মেয়েকে নিয়ে আমি কোথায় যাবো?
মুমূর্ষু অবস্থায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয় ৭০ বছরের বৃদ্ধা রাধা রানীকে। ধারালো বস্তুর আঘাতে দ্বিখণ্ডিত হাত নিয়ে ঢামেক হাসপাতালে আসা মোঃ ফারুককেও (২৫) ঢুকতে দেননি ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং আনসাররা।
জরুরি বিভাগে চিকিৎসকদের ঢুকতে না দেওয়া এবং চিকিৎসা বন্ধের ঘটনায় ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রি. জে. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, চিকিৎসাসেবা বন্ধ, আমাকে জানানো হয়নি। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।
সকালে ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের লিফটে ওঠাকে কেন্দ্র করে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে কয়েকজন যুবক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালান। এ ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে জরুরি বিভাগে গেলে সংবাদকর্মীদের ওপর চড়াও হন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারা সংবাদকর্মীদের ধাওয়া দিয়ে হাসপাতালের গেটের বাইরে বের করে দেন। এ সময় এটিএন নিউজের ক্যামেরাপারসন আতাউর রহমান হিমেলের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে তা ভেঙে দেন এবং হিমেলকে মারধর করেন।
** ঢামেকে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৪