ঢাকা: হিমোফেলিয়া একটি অনিরাময়যোগ্য রক্তরোগ। এই রোগে আক্রান্তদের রক্তক্ষরণের মাধ্যমে জীবনের ইতি ঘটে।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ দাবিতে সংগঠনটি মানববন্ধন করে। হিমোফেলিয়া রোগী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও এতে অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, কয়েক বছর আগেও শুধুমাত্র রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে এই রোগীদের বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হতো। কিন্তু রক্তের দুষ্প্রাপ্যতার কারণে অনেক শিশুর অকাল মৃত্যু ঘটতো এবং এখনও ঘটছে।
বর্তমানে রক্তের পাশাপাশি ফ্রেস ফ্রোজেন প্লাজমা ক্রাইয়োপ্রিসিপিটেড জাতীয় এক ধরনের রক্তের উপাদান দিয়ে চিকিৎসা চালানো হচ্ছে। উন্নত বিশ্বে রেগুলেশন ফ্যাক্টর নামে ২ ধরনের ইনজেকশন পাওয়া গেলেও বাংলাদেশে তা দুষ্প্রাপ্য এবং ব্যয়বহুল।
ফ্রেস ফ্রোজেন প্লাজমা ক্রাইয়োপ্রিসিপিটেড সঞ্চালনের কারণে রোগীরা হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি এবং এইচআইভিসহ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে।
তারা বলেন, হিমোফেলিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শিশুদের মৃত্যু হার সবচেয়ে বেশি। এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগেই কখনও ভুল চিকিৎসায় কখনও চিকিৎসার অভাবে অসংখ্য শিশু ঝরে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত এ রোগের স্থায়ী কোন চিকিৎসা আবিস্কার হয়নি। আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি ৫ হাজার শিশুর একজন এ রোগে আক্রান্ত।
মানববন্ধনে হিমোফেলিয়া রোগীদের স্বজনেরা বলেন, এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের কোন কারণ ছাড়াই শরীরের জোড়া, পাকস্থলি , দাঁতের মাড়ি, মস্তিষ্ক, ঘাড় ও গলা সহ বিভিন্ন অঙ্গে অনবরত রক্তক্ষরণ হতে থাকে। বারবার রক্তক্ষরণের জন্য সেসব স্থান ফুলে যায়। ফলে অনেক রোগীকেই পঙ্গুত্বও বরণ করতে হয়।
সরকারি বিশেষায়িত হাসপাতাল ‘হেলথ অ্যান্ড হোপ’র পরিচালক ডা. লেলিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আন্তর্জাতিক এবং বেসরকারি পরিসংখ্যান মতে দেশে হিমোফেলিয়া রোগীর সংখ্যা ১৫-২০ হাজার।
আর্থিকভাবে স্বচ্ছল রোগীরাই কেবল এ রোগের চিকিৎসা নিতে পারে। অটিস্টিক রোগীদের মত হিমোফেলিয়া রোগীদের জন্য জাতীয় বাজেটে একটি বিশেষ বরাদ্দ রাখতে পারে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ৫শয্যা বিশিষ্ট হিমোফেলিয়া ইউনিট স্থাপন এবং পর্যায়ক্রমে সকল সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি করে হিমোফেলিয়া ইউনিট স্থাপনের দাবিও জানানো হয় মানববন্ধনে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা,মে ৩১,২০১৪