ঢাকা: পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে এখন আলেম ওলামারা ফতোয়া দিয়ে আর মায়েদের ঠকাতে পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
রোববার দুপুরে রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে ‘ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র পরিচালনা সহায়িকার মোড়ক উন্মোচন ও সার্বক্ষণিক নিরাপদ প্রসব সেবা কার্যক্রম বাস্তবায়নে অভিজ্ঞতা বিনিময়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মীরা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কাজ করছে। একটি সময় ছিলো পরিবার পরিকল্পনার কথা শুনলে আলেম ওলামারা ফতোয়া দিতো। তাদের ফতোয়ায় গ্রামের অনেক মায়েরা পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ থেকে বিরত থাকতো। কিন্তু এখন যুগ পরিবর্তন হয়েছে, এসব ফতোয়া দিয়ে আর গ্রামের মায়েদের ঠকানো যায় না।
তিনি বলেন, আমরা নিরাপদ মাতৃত্ব চাই। নিরাপদ শিশু চাই। গত কয়েক বছর ধরে মায়ের মমতা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিরাপদ মা ও শিশুর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
এ সময় তিনি বলেন, একজন সন্তানের কাছ ‘মা’ শব্দের থেকে প্রিয় শব্দ আর নেই। এ জন্য সমাজের যারা বিত্তবান আছেন তদের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে (হাসপাতাল) নিরাপদ প্রসবের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এম নিয়াজউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নূর হোসেন তালুকদার, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, এমসিএইচ সার্ভিসেস এর পরিচালক ডা. মোহাম্মদ শরীফ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে এক লাখ জনে ১৯৪ জন মা মৃত্যুবরণ করেন। মাতৃ মৃত্যু ও নবজাতকের মৃত্যুহার কমে আসলেও তা সন্তোষজনক নয়। এর প্রধান কারণ এখনো ৭০ ভাগ মা বাড়িতে প্রসব করেন। এই প্রসবের ৯৭ ভাগই হয় অদক্ষ প্রসবকারী দ্বারা।
অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, মা ও নবজাতকের মৃত্যু ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা হ্রাস করার জন্য ২০১১ সালে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের এমসিএইচ সার্ভিসেস ইউনিট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে স্বাভাবিক প্রসবসেবা কার্যক্রম জোরদার করে এবং সপ্তাহের প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা স্বাভাবিক প্রসবসেবা কার্যক্রম চালু করে। এই দুই পর্যায়ে বর্তমানে এক হাজার ৪৪১টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র থেকে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে এ সেবা দেশের তিন হাজার ৮৬০টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সম্প্রসারণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৪