সম্প্রতি বাংলাদেশে মার্স (Middle East Respiratory Syndrome) ভাইরাসের সংক্রমণ পরিলক্ষিত হয়েছে। মার্স (MERS) একটি ভাইরাস জনিত সংক্রামক রোগ যা মূলত আমাদের শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ তৈরি করে।
কিভাবে ছড়ায়
এ রোগ কিভাবে ছড়ায় তা এখনও পুরোপুরি আবিষ্কৃত হয়নি। তবে উটের মধ্যে এ ভাইরাসের উপস্থিতি প্রমাণিত হওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে যে উটের মাধ্যমেই এ ভাইরাস মানুষের দেহে ছড়িয়েছে। এছাড়া আক্রান্ত মানুষ থেকে সুস্থ মানুষের দেহে এটি ছড়াতে পারে।
রোগের লক্ষণ এবং জটিলতা
. সাত (০৭) দিনের বেশি জ্বর (১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি তাপমাত্রা) এবং কাশি।
. দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস।
. সারা শরীরে ব্যাথা।
. কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডাইরিয়া এবং বমি।
. উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে কিডডি বিকল হতে পারে।
. আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যুর হার (Case Fatality) ২৭ ভাগ।
প্রতিরোধ
এখন পর্যন্ত মার্সের কোনো প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। তাই এ রোগের লক্ষণ এবং উৎস জেনে সতর্ক হওয়াই প্রতিরোধের প্রধান উপায়। মার্স প্রতিরোধে নিম্নলিখিত সতর্কতাগুলো মেনে চলতে হবে।
. আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।
. সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য (সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, মিশর প্রভৃতি দেশ) ফেরত কোনো ব্যক্তি সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত জেনে থাকলে তিনি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাকে এড়িয়ে চলাই ভালো।
. আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করার সময় মাস্ক ব্যবহার করা এবং সাক্ষাতের শেষে হাত মুখ ভাল করে ধুয়ে ফেলা।
. উটের মাংস ও দুধ পরিহার করা।
. সম্ভব হলে উটজাত যে কোনো পণ্য পরিহার করা।
.যথাযথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (মাস্ক, গ্লাভস) ছাড়া উটের কাছে না যাওয়া।
চিকিৎসা
সাত (০৭) দিনের বেশি জ্বর এবং কাশিতে ভুগে থাকলে অতিসত্ত্বর আপনার নিকটস্থ চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হোন। আপনার মার্স ভাইরাসের সংক্রমণের সম্ভাব্য কোনো ইতিহাস থাকলে তা অবশ্যই চিকিৎসকে অবহিত করুন। মনে রাখবেন আপনার সহযোগিতা ছাড়া চিকিৎসকের পক্ষে এই রোগ সনাক্ত করা এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ কঠিন হবে। মার্স ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।
জয় প্রকাশ রায়
৪র্থ বর্ষ ডিভিএম (Doctor of Veterinary Medicine),
ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ,
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
ইমেইল: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৪