ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বিধিমালায় বিলম্বিত ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০১৪
বিধিমালায় বিলম্বিত ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’

ঢাকা: মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের নয় মাসেও গঠন হয়নি ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’। দুই মন্ত্রণালয় থেকে এই ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের’ চেয়ারম্যান এবং সদস্য নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হলেও বিধিমালা প্রস্তুত না হওয়ায় এর বাস্তবায়ন সময় সাপেক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


 
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বলছে, বিধিমালা প্রস্তুত হলেই কর্তৃপক্ষ গঠনে কোন বাধা থাকবে না। খুব শিগগিরই বিধিমালা প্রস্তুত হবে।
 
খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মেশালে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর জেল এবং পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ‘নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভা এই আইনকে ‘আধুনিক আইন’ হিসেবে উল্লেখ করে।

খাদ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি ‘খাদ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদ’ এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’ গঠন করা হবে। খাদ্য কর্তৃপক্ষকে সমন্বয় এবং কারিগরি কমিটি গঠনেরও ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
 
একই বছরের ১ জুলাই খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মেশানোর জন্য জেল-জরিমানার বিধান রেখে আইন করার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল সরকার।
 
ওই আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ফৌজদারি আদালতে ২২ ধরনের অপরাধের বিচার করার কথা বলা হয়। পরবর্তীতে আইনটি সংসদে পাস হয়।
 
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মুশফেকা ইকফাৎ বাংলানিউজকে বলেন, বিধিমালার খসড়া মতামত গ্রহণের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় বিধিমালা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর স্টেক হোল্ডারদের মতামত গ্রহণ করে চূড়ান্ত করবে। এরপর তা অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে।
 
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জানায়, সম্প্রতি জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয় বিধিমালাটির অনুমোদন দিয়েছে।
 
কত দিনে বিধিমালা প্রস্তুত হতে পারে- সে ব্যাপারে স্পষ্ট কোন ধারণা না দিলেও মুশফেকা ইকফাৎ বলেন, দীর্ঘ সময় লাগবে না। খুব শিগগিরই হবে। বিধিমালার পরই খাদ্য আইন বাস্তবায়ন করা যাবে।
 
ভোক্তাদের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে খাদ্য আইন বাস্তবায়নের জন্য খুব দ্রুত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান সচিব।
 
তবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের অভাবে খাদ্য কর্তৃপক গঠন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হতে পারে।
 
বিষয়টি স্বীকার করে খাদ্য সচিব বলেন, আমরা আগে এক্সপার্টদের খুঁজবো। মন্ত্রণালয় সহানুভূতিশীল হলে এ বছরের মধ্যেই সম্ভব হবে।
 
খাদ্য সচিব জানান, বিধিমালা প্রস্তুত ও কর্তৃপক্ষ গঠনের পর ব্যাপকভিত্তিক অভিযান শুরু করা হবে। আইনের বিধান অনুসরণ করে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
 
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, নিরাপদ খাদ্য বিধিমালা ফেব্রুয়ারিতে প্রস্তুত করে বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিকদের মতামত নিয়ে মে মাসে চূড়ান্ত করা হয়।

জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের পদমর‌্যাদা, যোগ্যতা, পদ এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ও আর্থিক সুবিধার শর্ত ইতিমধ্যে সংশোধন করা হয়েছে।

খাদ্যসচিব বলেন, সরকারের ১৩ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সমন্বয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠিত হবে, যা খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করবে। এই খাতের বিশেষজ্ঞদের কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সদস্য হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা হবে।
 
তিনি আরো জানান, কর্তৃপক্ষ নতুন কোনো পরীক্ষাগার স্থাপন করবে না, বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের বিদ্যমান পরীক্ষাগার ভেজাল খাবার পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করবে। পরীক্ষাগারসমূহ বিদ্যমান কর্তৃপক্ষের অধীনেই পরিচালিত হবে।

খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠনের কাজটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আইনের ফলে দেশে সবার নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। তবে আইনটি চূড়ান্ত করতে এখনও দু'এক বছর সময় লাগবে।

** প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তরের মধ্যদিয়ে বাজেট অধিবেশন শুরু
 
বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।