ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং এশিয়া প্যাসিফিক হসপিটালস প্যালিয়েটিভ কেয়ার নেটওয়ার্ক (এপিএইচএন)’র যৌথ উদ্যোগে শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকের নীচতলায় শহীদ ডা. মিলন হলে ‘বাংলাদেশে মূল ধারার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় প্যালিয়েটিভ মেডিসিনের সংযোজন এবং ক্যান্সার ব্যথা প্রশমন বিষয়ক এক বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
প্যালিয়েটিভ কেয়ারে দাতা ও নেতৃত্ব বৃদ্ধির জন্য ৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ সচিব নাসিমা বেগম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নুরুল হক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক আতোয়ার রহমান এবং জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন মিয়া।
সেমিনারে ক্যান্সারের ব্যথা সম্পর্কে আলোকপাত করেন ভারতের ডা. সুষমা ভাটনাগার। মরফিন সম্পর্কিত যাবতীয় কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণা সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসক ডা. জন ফিলিপস। কিভাবে মুখে খাওয়ার মরফিন ব্যবস্থাপত্রে উল্লেখ করা উচিত সে বিষয়ে বক্তব্য রাখেন অস্ট্রেলিয়ার ডা. ডর্গিজ।
জাতীয়ভাবে প্যালিয়েটিভ কেয়ারকে মূলধারার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সঙ্গে সংযোজন করা এবং ওষুধের সহজপ্রাপ্যতার বিষয়ে আলোকপাত করেন সিঙ্গাপুরের চিকিৎসক ডা. সিন্থিয়া গো।
সেমিনারে বক্তারা ‘প্যালিয়েটিভ মেডিসিন এবং ক্যান্সার ব্যথা প্রশমন’ সংযোজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে এ সেবাটি চালু হলে নিরাময় অযোগ্য রোগীরা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন।
বিএসএমএমইউ’র সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রকল্প সমন্বয়ক অধ্যাপক নিজাম উদ্দীন আহমেদ জানান, নিরাময় অযোগ্য সীমিত সম্ভাবনার সকল বয়সী রোগীদের নানা ধরনের ব্যথা, অসহনীয় বিভিন্ন শারীরিক উপসর্গ, মানসিক চাপ ও হতাশা ইত্যাদির উপশম প্রচেষ্টা এবং তার পরিবারকে যথাযথ যৌক্তিক দিক-নির্দেশনা প্রদানের বিজ্ঞানসম্মত ধারণা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা বিশ্বে প্যালিয়েটিভ মেডিসিন নামে পরিচিত।
তিনি জানান, বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত নিরাময় অযোগ্য রোগীদের জন্য ইনডোর সার্ভিস, আউটডোর সার্ভিস, হোম কেয়ার সার্ভিস, ২৪ ঘণ্টা টেলিফোন সার্ভিস, ডে কেয়ার সার্ভিস, লিমফ ইডিমা চিকিৎসাসেবা, গবেষণা কার্যক্রম ইত্যাদি চালু রয়েছে।
তিনি আরো জানান, প্যালিয়েটিভ সেন্টারের বহির্বিভাগে ২০০৭ সালে ১৪ জন, ২০০৮ সালে ৩৪৩ জন, ২০০৯ সালে ৪১৫ জন, ২০১০ সালে ৫৮৮ জন, ২০১১ সালে ৮২৮ জন, ২০১২ সালে ১১৭৬ জন ও ২০১৩ সালে ১২৯৬ জন এবং ইনডোরে ২০০৯ সালে ২৭ জন, ২০১০ সালে ৫৪ জন, ২০১১ সালে ২১১ জন, ২০১২ সালে ৪১৩ জন এবং ২০১৩ সালে ৪৯০ জন সম্পূর্ণ নিরাময় অযোগ্য রোগীকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘন্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৪