ঢাকা: মন প্রফুল্ল রেখে শরীর সতেজ করে কাজে গতি আনতে নিশ্চয় এক কাপ চায়ে চুমুক দিতে চাইবেন। কিন্তু তার আগে, নিশ্চিত হয়ে নেবেন ওই চা কোন ব্র্যান্ডের, যদি ভারতীয় ব্র্যান্ডের হয়- তবে প্রাণ বাঁচাতে অবশ্যই তা ফেলে দিন!
ভারতীয় চা বিষাক্ত কীটনাশক মেশানো বলে সম্প্রতি দেশটির একটি খাদ্য ও কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন প্রকাশের পর চা-প্রেমীদের এমন পরামর্শই দিতে হচ্ছে।
দেশটির চা শিল্পের হালচাল নিয়ে ‘ফুড অ্যন্ড অ্যাগ্রিকালচার টিম অব গ্রিনপিস ইন্ডিয়া’ নামে ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কেবল দেশের বাজারের কর্তৃত্বেই নয়; রাশিয়া, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরানসহ আন্তর্জাতিক বাজার দাপিয়ে বেড়ানো ভারতীয় চায়ে কীটনাশক মেশানো হচ্ছে আশঙ্কাজনক মাত্রায়।
দেশটির শীর্ষ ১১টি চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮টি প্রতিষ্ঠানের ৪৯টি পৃথক প্যাকেজ চা পরীক্ষা করে দেখা গেছে-
*৪৯টি প্যাকেজ চা’র (নমুনা) ৪৬টির মধ্যেই অন্তত একধরনের হলেও বিষাক্ত কীটনাশক মেশানো হয়েছে।
*এসব নমুনার ২৯টিতেই বিষাক্ত কীটনাশকের মিশ্রণের পরীক্ষার ফলাফল ‘পজিটিভ’ পাওয়া গেছে।
*এসব নমুনায় পৃথক ব্র্যান্ডের মোট ৩৪ ধরনের কীটনাশক পাওয়া গেছে।
*এসব নমুনার প্রত্যেকটিতে প্রায় ৬৭ শতাংশ করে নিষিদ্ধ ডিডিটি কীটনাশক (ডাইক্লোরো ডাইফেনাইল ট্রাইক্লোরো ইথেন, গৃহস্থালি পরিষ্কারে ব্যবহৃত রাসায়নিক) পাওয়া গেছে। ১৯৮৯ সালে বিপজ্জনক চিহ্নিত করে এ কীটনাশকটি ভারতীয় কৃষিতে ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
২০১৩ সালের মে থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরের বেশি সময় ধরে এ গবেষণা চালানো হয়।
চা শিল্পে এ ধরনের বিপর্যয় প্রসঙ্গে গ্রিনপিস ইন্ডিয়ার জ্যেষ্ঠকর্মী নেহা সৈগল বলেন, ভারতীয় চা আমাদের জাতীয় গর্ব এবং এ কারণে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ এর সঙ্গে মেশানো উচিত নয়।
চা শিল্পের এ অবনতিতে এটিকে রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সকল অংশীদারের এগিয়ে আসা উচিত বলেও মন্তব্য করেন নেহা।
যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করে ভারতীয় চা বোর্ড দাবি করেছে, সেদেশের সকল চা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে প্রস্তুত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৪