রাজশাহী: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে এবার সরকারের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী, হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ও তার ব্যক্তিগত সহকারীর বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার নিয়োগ সংক্রান্ত নথিসহ সংশ্লিষ্ট সকল রেকর্ড দুদকে পাঠানোর জন্য এরই মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
রামেক হাসপাতালের একটি সূত্র জানান, গত জানুয়ারি মাসে রাজশাহী থেকে এক ব্যক্তি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগটি আমলে নিয়ে এর প্রেক্ষিতে দুদক অনুসন্ধান শুরু করতে যাচ্ছে। এজন্য প্রথমেই নথিপত্রসহ সকল রেকর্ড তলব করেছে।
দুদকে করা ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের শেষের দিকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান হাসপাতালে পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসপাতালের সাবেক স্টেনোগ্রাফার মোজাহার আলীকে তার নিজের লোক হিসেবে পরিচালকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
এখান থেকেই দুর্নীতির শুরু। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রভাব খাটিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর মোজাহারকে স্টেনোগ্রাফার পদে নিয়োগ দেন। ওই সময় থেকেই তিনি পরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পরে মন্ত্রী, পরিচালক ও মোজাহার মিলে দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেন। স্টেনোগ্রাফার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে হাসপাতালে বহু কুকর্মের সহযোগী মোজাহার লিফটম্যান ছিলেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর পত্রিকায় পুনঃবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। মন্ত্রী, পরিচালক ও মোজাহার মিলে ২৪টি পদ ভাগাভাগি করে নেন। এর মধ্যে মন্ত্রী ও তার লোকজনদের সুপারিশে ১০ জন, পরিচালকের ১০ জন ও মোজাহারের চারজন রয়েছেন।
তবে ফাঁস হওয়া নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। সকল আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
নথি পাঠানো প্রসঙ্গে রামেক হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন জানান, নিয়োগ সংক্রান্ত অনেক কাগজপত্র রয়েছে। এতোসব কাগজ এক জায়গায় করতে সময়ের প্রয়োজন। বিষয়টি এরই মধ্যে দুদক সচিবকে অবহিত করা হয়েছে। তবে আগামী সপ্তাহের যেকোনো দিন কাগজপত্রগুলো দুদক পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৪