ঢাকা: যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হলে সরকারি অর্থায়ন বাড়াতে হবে বলে মত দিয়েছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে সর্বস্তরের অংশীদারদের সমন্বয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রোগ্রাম কনসালটেন্ট মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যক্ষ্মার ধরণও পাল্টে যেতে পারে। যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ে আরো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। তবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দাতাদের আর্থিক সহায়তা মিলবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সরকার আর্থিক সহায়তা না বাড়ালে যক্ষ্মায় অর্জিত সাফল্য ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। এজন্য দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মো. নুরুল হক সরকারের সাফল্য তুলে ধরে বলেন, যক্ষ্মাসহ সরকারের সকল কর্মসূচি সফল করতে হলে প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা, অঙ্গীকার, বেসরকারি সংস্থা ও গণমাধ্যমের সহযোগিতা এবং সর্বোপরি জনসাধারণণের সম্পৃক্ততা।
ব্র্যাকের টিবি, ম্যালেরিয়া, ওয়াশ ও ডিইসিসির পরিচালক ড. মো. আকরামুল ইসলাম দাতাদের কাছ থেকে অর্থ বাড়ানোর সুপারিশ তুলে ধরে বলেন, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করলেও সব সমস্যার সমাধান শেষ ভাবলে বড় ভুল হবে। সামগ্রিকভাবে এক্ষেত্রে সফলতা আসলেও এখন থেকে আমাদের নজর দিতে হবে যক্ষ্মা আক্রান্তের মুত্যুর সংখ্যা এবং এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা যাতে না বাড়ে।
জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আহম্মদ হোসেন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. সাবেরা সুলতানা, ডেমিয়েন ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর রম বাট, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাকিল আহমেদ, ব্র্যাকের হেলথ, নিউট্রিশন অ্যান্ড পপুলেশন প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. শায়লা ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেইঞ্জ প্রোগ্রামের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সাগুফতা সুলতানা।
বক্তারা যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোকে তুলে ধরেন। যার মধ্যে রয়েছে সরকারের পাশাপাশি যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত বেসরকারি সংস্থাগুলোর ফলপ্রসূ অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা, কর্মকাণ্ড জোরালো করার জন্য অংশীদারদের সংখ্যা বাড়ানো, রোগীদের চিকিৎসা সেবায় গাফিলতি, স্বাস্থ্য আচরণবিধি মেনে না চলা, আধুনিক চিকিৎসা উপকরণের অভাব, মানসম্মত ওষুধ না থাকা, চিকিৎসার জন্য স্বতন্ত্র্য এমডিআর হাপাতালের অভাব, শিশু যক্ষ্মা শনাক্তকরণ ঠিকমত না হওয়া এবং রোগ শনাক্ত করার ক্ষেত্রে জটিলতা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘন্টা, আগষ্ট ২৫, ২০১৪