ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

গবেষণা ছাড়া রোগ প্রতিরোধ সম্ভব নয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৪
গবেষণা ছাড়া রোগ প্রতিরোধ সম্ভব নয় ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: রোগ নিরাময় গবেষণা ছাড়া প্রতিরোধ সম্ভব নয় জানিয়ে এ সম্পর্কিত সব গবেষণায় সরকার সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
 
বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে কালাজ্বরের নতুন চিকিৎসা’ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।


 
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা করে ড্রাগস ফর নেগলেকটেড ডিজিজ ইনিশিয়েটিভ (ডিএনডিআই)।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় তিন লাখ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হন। যার মধ্যে কমপক্ষে ৪০ হাজার রোগী মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশের কয়েকটি এলাকায় সম্প্রতি কালাজ্বরের প্রাদুর্ভাব মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকায়। এছাড়া পাবনা, যশোর, রাজশাহী এলাকায়ও মানুষ এ রোগে অক্রান্ত হচ্ছেন। তাই কালাজ্বর নিরাময়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) পরামর্শ অনুযায়ী Ambisome and Combination চিকিৎসা ব্যবহার করা উচিত।
 
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে রোগ নিরাময় গবেষণায় বরাদ্দ অনেক কম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, বাংলাদেশ থেকে ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, যক্ষ্মা প্রতিরোধের জন্য যারা গবেষণা করবেন তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
 
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে কালাজ্বর আক্রান্ত এলাকা চিহ্নিতকরণ ও কালাজ্বর প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গবেষণার ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
 
বর্তমানে বাংলাদেশের ৪৫টি জেলায় এ রোগের প্রকোপ লক্ষ্য করা গেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। যার মধ্যে বৃহত্তর ময়মনসিংহ প্রধান। তবে বাংলাদেশ এ রোগ প্রতিরোধে অনেকটা সফল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
 
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে কালাজ্বরমুক্ত করতে ভারত, নেপাল এবং বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করছে। এসব দেশের গবেষকরা যৌথভাবে এ রোগ নির্মূলে গবেষণা করে প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে।
 
কালাজ্বরের প্রতিষেধক আবিষ্কারে কম বিনিয়োগ করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার এ রোগ নির্মূলে যথেষ্ঠ সতর্ক রয়েছে। ভবিষ্যতে গবেষণায় গবেষকদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।
 
মন্ত্রী বলেন, আগে কালাজ্বর, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা রোগের কোনো ওষুধ ছিল না। কিন্তু আমরা ধীরে ধীরে এসব রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছি। কারণ বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে চলেছে।
 
গ্রাম অঞ্চলের স্বাস্থ্য সেবার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, গ্রামের মানুষের দ্বারে উন্নত স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা তরুণ ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছি। তবে অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে তাদের কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আশা করি ধীরে ধীরে অবকাঠামো উন্নয়ন করে তাদের সব সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে।
 
এ সময় মন্ত্রী কালাজ্বর নিরাময়ে গ্রামের তরুণ ডাক্তারদের সহায়তা করতে গবেষকদের আহ্বান জানান।    
 
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশে এখনও কালাজ্বরের যে চিকিৎসা আছে তা শতকরা ৯১ ভাগ কার্যকর রয়েছে। এরপরও এ হার শতভাগে উন্নিত করার জন্য আমাদের দেশের গবেষকদের প্রচেষ্টা ‍অব্যাহত রয়েছে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. মো. রিদওয়ানুর রহমান, প্রিন্সিপ্যাল এবিএম মুকসুদুল আলম, প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৪/আপডেট: ১৫৫৬ ঘণ্টা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।