ঢাকা: স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি বা অনিয়মের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) সাসাকাওয়া মিলনায়তনে ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নতকরণ প্রকল্প’র উদ্বোধন এবং পাইলট পর্বের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানটির আয়োজনে ছিল ‘ক্লিনিক্যাল গভর্ন্যান্স’ এবং সহযোগিতা করে ‘গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন।
টিআইবির প্রতিবেদনে স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি ও অনিয়মের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সে ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, যদি কোনো দুর্নীতি বা অনিয়মের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তবে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, টিআইবির প্রতিবেদনে ঢালাওভাবে সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি। তাছাড়া আমিও প্রতিবেদনটি এখনও দেখিনি। দেখার পরই এ বিষয়ে বলতে পারবো।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যখাত অনেক স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। এই খাতে অনেক অর্জন রয়েছে। মানুষের কাছে সঠিক স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করছি।
স্বাস্থ্য এম এম নিয়াজউদ্দিনের বিরুদ্ধে ‘মুক্তিযুদ্ধ সনদ জালিয়াতির অভিযোগ’ থাকা সত্ত্বেও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কেনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি আজ শুনেছি যে তিনি (স্বাস্থ্য সচিব) পদত্যাগ করেছেন এবং তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে শোকজ করা হয়েছে। আর তাকে কোনো সময় দেওয়া হয়নি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নতকরণ প্রকল্প’-টিকে আমি স্বাগত জানাই। এর মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্য সেবা আরো উন্নত করা সম্ভব। আমি চাই, এই প্রকল্পটি দেশের সব জায়গাতে তাদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিতে পারবে।
তিনি বলেন, দেশের গরিব মানুষ যাতে সঠিকভাবে স্বাস্থ্য সেবা পায়, সেই দিকে আমাদের চিকিৎসকদের নজর রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের প্রতিটি বিভাগের হাসপাতালগুলোতে আইসিও এবং সিসিও ওয়ার্ড চালু করার জন্য আমরা কাজ করছি; যাতে করে মানুষ দ্রুত সঠিকভাবে এবং সহজেই স্বাস্থ্য সেবা পেতে পারে।
আইসিডিডিআর,বি’র ক্লিনিক্যাল গভর্ন্যান্সের প্রধান লুৎফে আরা বলেন, ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নতকরণ প্রকল্প’ আমাদের দেশে নতুন। তবে দেশের সব নাগরিকের নিরাপদ এবং সঠিক স্বাস্থ্য সেবায় এই প্রকল্প অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পটির মাধ্যমে আমরা চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত নার্স, ল্যাবরেটরি স্টাফ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ স্বাস্থ্য সেবায় জড়িত সবাইকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। আগামী দশকের স্বাস্থ্যখাতে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জন্য এটি উত্তম প্রকল্প।
এ সময় প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এ সময় হাসপাতালটি পরিদর্শনও করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মুহাম্মদ নুরুল হক, গ্ল্যক্সোস্মিথক্লেইন বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আজিজুল হক, আইসিডিডিআর,বি’র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর প্রফেসর জন ডি ক্লেমেন্স, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. ইকবাল আর্সেলান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৪