ঢাকা: দেশে প্রতিবছর তিন লাখ লোক যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ৭০ হাজার মানুষ মারা যায়।
বৃহস্পতিবার (০৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি: নগর ভিত্তিক কাযক্রম’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে যক্ষ্মায় প্রতিবছর ৭০ হাজার লোক মারা গেলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান ভালো বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিপ্তরের মহাপরিচালক ডা. দীন মো. নুরুল হক।
গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, অতীতের তুলনায় যক্ষ্মারোগ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। বিশ্বে প্রতিবছর ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন লোক যক্ষ্মায় মারা যায়। আর বাংলাদেশে মারা যায় ৭০ হাজার।
বাংলাদেশে যক্ষ্মায় আক্রান্ত বেশি হলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় মৃত্যুর হার কম জানিয়ে তিনি বলেন, এই রোগ নিয়ে আমাদের এতো বেশি হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।
যক্ষ্মা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং পরিত্রাণের জন্য সরকারি- বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত কর্মকাণ্ড সমন্বয়ের মাধ্যমে করার আহ্বান জানান তিনি।
ডা. দীন মো. নুরুল হক জানান, যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে শুধু ঢাকা শহরে ১৩৮টি কেন্দ্র রয়েছে। এসব চিকিৎসা কেন্দ্রে বিনামূল্যে যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা কেন্দ্র অনেকেরই অজানা উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ব্র্যাকের কর্মকর্তাদের বলবো, আপনারা যেহেতু যক্ষ্মা রোগীদের নিয়ে ভালো কাজ করছেন, তাই আপনারা সেসব চিকিৎসা সেন্টার সম্পর্কে বিলবোর্ড দিয়ে জনগণকে অবহিত করুন।
জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, দৈনিক ইত্তেফাক ও ব্র্যাকের যৌথ আয়োজনে গোলটেবিল বৈঠকে সভাপত্বি করেন ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কর্মসূচির ব্যবস্থাপক ডা. আহমেদ হোসেন খান।
মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, বাংলদেশে যক্ষ্মা একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা। দেশে প্রতিবছর লাখে নতুন করে ২২৪ জন যক্ষ্মারোগে আক্রান্ত হয়। মারা যায় লাখে ৫১ জন রোগী।
ডা. আহমেদ হোসেন জানান, ২০১৩ সালে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মাধ্যমে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫০৭ জন যক্ষ্মারোগী শনাক্ত করা হয়েছে। যা দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে লাখে ১১৯ জন।
গোলটেবিল বৈঠকে উন্মুক্ত আলোচনায় চিকিৎসক, এনজিওকর্মী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার একাধিক প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, শহরে যে সব যক্ষ্মারোগী সনাক্ত হয়েছে তাদের অধিকাংশ হল বস্তিবাসী ও দরিদ্র মানুষ। যক্ষা নিয়ন্ত্রণে বস্তির দিকে আলাদাভাবে নজর দেওয়ার কথা বলেছেন বক্তারা।
বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য দেন, ব্র্যাকের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার অ্যাডভোকেসি ফর সোসাল চেঞ্জ সাগুফতা সুলতানা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৪