ঢাকা, বুধবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২, ০৭ মে ২০২৫, ০৯ জিলকদ ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

গ্যাস আসলে কী

ডা. মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, বিভাগীয় সম্পাদক, স্বাস্থ্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:০৭, জানুয়ারি ২১, ২০১৫
গ্যাস  আসলে কী

প্রায়শই আমরা বলে থাকি আমার গ্যাসের সমস্যা আছে। নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতায় খাবারের প্রসঙ্গ আসলেই আমরা গ্যাসের কথা বলে বিভিন্ন খাবার না খেতে পারার জন্য আফসোস করি।

চিকিৎসকের কাছে গেলে আমরা তাকে— ‘ডাক্তার সাহেব আমার কিন্তু গ্যাসের সমস্যা আছে’—কথাটা স্মরণ করিয়ে দেই।

এমনকি অনেক চিকিৎসকও রোগীদের কাছে একটা প্রশ্ন ছুড়ে দেয়—‘আপনার কি গ্যাসের সমস্যা আছে’? অধিকাংশ রোগীরা বুঝে হোক না বুঝে হোক বলে দেয়, হ্যাঁ ডাক্তার সাহেব আমার গ্যাসের সমস্যা আছে।

এতো যে আলোচিত এই গ্যাস তা আসলে কী?
প্রত্যেকের পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত ও বৃহদান্তে গ্যাস থাকে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এর পরিমাণ বেড়ে গেলেই সমস্যা অনুভূত হয়। আমাদের শরীরে পেটের এই অঙ্গগুলোতে উপকারী অনেক ব্যাকটেরিয়া থাকে। এসমস্ত ব্যাকটেরিয়া খাবার হজমে সাহায্য করে। খাবার হজমের পর‌্যায়ে আনতে এরাই কার্বনডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন ও মিথেন প্রভৃতি গ্যাস তৈরি করে।

এ সমস্ত গ্যাস গন্ধমুক্ত। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ সমস্ত ব্যাকটেরিয়া সালফার সমৃদ্ধ গ্যাস তৈরি করে যা দুর্গন্ধযুক্ত।

undefined

কখন বুঝবেন আপনার অতিরিক্ত গ্যাসজনিত সমস্যা আছে

১. মুখ দিয়ে শব্দশহ গ্যাস নির্গত হলে। যাকে বলে বারপিং বা লেববিং।

২. পেট ভারি ভারি বা ফোলা ফোলা লাগা, কখনো গুড় গুড় শব্দ হয়। এটাকে বলে ব্লটিং।

৩. স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে পায়ু পথে বেশি সংখ্যকবার বায়ু নির্গত হওয়া। তবে এটা ব্যক্তিভেদে আলাদা হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে বিশবার পর‌্যন্ত বায়ু নির্গত হওয়া স্বাভাবিক।

৪. বায়ু নির্গত হবার পর পেট ব্যথা বা পেট ফোলা কমে গেলে বুঝতে হবে অতিরিক্ত গ্যাসের চাপ আছে।

গ্যাসকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন
এক. আপনার খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন। এটা ‘ট্রায়াল এন্ড ইরর’ পদ্ধতিতে হবে। সব খাবার সবার ক্ষেত্রে একই পরিমাণ গ্যাস উৎপন্ন করে না।

তেলের ভাজাপোড়া ও চর্বিযুক্ত খাবার মোটামুটি সবার ক্ষেত্রেই গ্যাস উৎপন্ন করে। পাশাপাশি কিছু কিছু আঁশযুক্ত খাবারও কারোর জন্য অতিরিক্ত গ্যাসের কারণ হয়ে থাকে। ময়দা বা আটার রুটি, পেঁয়াজ, ফুলকপি, আপেল, নাশপাতি, শীম ইত্যাদি খাবার কারো কারো অধিক পরিমাণ গ্যাস তৈরি করে।

দুই. কোমল পানীয়। যেগুলো কার্বোনেটেড সেগুলো পরিত্যাগ করতে হবে।

তিন. বিয়ার, এনার্জি ড্রিংক খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

চার. বেশি বেশি চিনিযুক্ত ডেইরি খাবার পরিত্যাগ করে দই জাতীয় খাবার বেশি খেতে পারেন।

পাঁচ. একেবারে তিনবেলা বেশি না খেয়ে কম পরিমাণ খাবার বারে বারে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।

ছয়. বায়ু আসলে তা চেপে না রেখে নির্গত করতে হবে।

সাত. অধিক পরিমাণ এন্টিবায়োটিক খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

অাট. এন্টিগ্যাস ওষুধ যেমন— ল্যাকটোস, সিমিথিকন জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।