ঢাকা: ফল বা ফলের রস- দুটোই শরীরের জন্য উপকারী। তবে কোনটি বেশি কোনটি কম, তা নিয়ে থাকতে পারে প্রশ্ন।
এবার আসা যাক সিদ্ধান্তে। পুষ্টিবিদের মতে, পুষ্টিগুণের দিক থেকে এ দু’টির মধ্যে সামান্য পার্থক্য রয়েছে। সাধারণত সম্পূর্ণ ফল ও ফলের রসে ভিটামিন, খনিজ ও এন্টি-অক্সিডেন্ট প্রায় একই পরিমাণে থাকে। পার্থক্যও রয়েছে কিছু।
সম্পূর্ণ ফলে ফাইবার থাকে, যা ফলের রসে পাওয়া যায় না। ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে, হৃৎপিণ্ড ভালো রাখে ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে। একইসঙ্গে এটি হজমশক্তি বাড়ায়, ত্বক ভালো রাখে, ওজন হ্রাস করে ও কিডনিতে পাথর জমতে দেয় না।

undefined
পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, ফল যখন বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় রস করা হয় তখন এর মধ্যকার ফাইবারসহ পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন চলে যায়। শতভাগ ফলের রসেও গুণাগুনের এ তারতম্য থাকে। কমলালেবুর উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, কমলার কোষের উপরে পাতলা সাদা আবরণ থাকে, যা ফ্লেভোনয়েডের প্রাথমিক উৎস। ফ্লেভোনয়েড শরীরের অসংখ্য বিপাক প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। আবার রসালো কমলা অংশটিতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, শরীরে ফ্লেভোনয়েড ও ভিটামিন সি প্রায়শই একসঙ্গে কাজ করে। যখন কমলার রস করার সময় উপরের সাদা আবরণ তুলে ফেলা হয়, তখন জুস থেকে ফ্লেভোনয়েড উধাও হয়ে যায়।

undefined
সুতরাং, বলা যায় ফলের রসে সম্পূর্ণ ফলের পুষ্টির একটা বিরাট অংশ বাদ পড়ে যায়। তাই পুষ্টিবিদরা ফলের রসের চেয়ে পুরো ফলটাই খেয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
কিন্তু আবার এটা ভেবে ভুল করে বসবেন না। ফলের রস খেতে কিন্তু মানা নেই। তবে ফলের রস খেতে চাইলে তা বাড়িতেই তৈরি করে নেওয়া ভালো। কারণ বাজারে যেসব ফলের জুস পাওয়া যায় তাতে আসল ফলের রস তেমন থাকে না বললেই চলে। যা থাকে তা মূলত ফ্লেভার, কৃত্রিম সুইটনার (শুক্রোজ বা হাই ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ) ও রং। যা শরীরে বাড়তি ক্যালরি যোগ করে।

undefined
ফল শরীর থেকে টক্সিন দূর করে। অর্থাৎ, এটি শরীরকে ডেটক্স করে। ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় ফল শরীরে শক্তি যোগায় ও কর্মক্ষম রাখে। তাই দিনে নিশ্চিন্তে দু’তিনবার ফল খেতে পারেন। চেষ্টা করুন সব ধরনের ফল খেতে। বিশেষ করে রঙিন ফল।
একটি তথ্য জেনে রাখা ভালো, যে ফলে যত বেশি ফাইবার থাকে সে ফলে জিআই (গ্লাইসেমিক ইনডেক্স) তত কম। জিআই রক্তের শর্করার মাত্রা ও ইনসুলিনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে।

undefined
আপেল, কলা, ব্লুবেরি, ফিগ, আঙুর, পেয়ারা, বেদানা, স্টবেরি ইত্যাদি ফলে জিআইয়ের পরিমাণ খুব কম থাকে। ফলে এগুলো রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রাখে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৫
এসএমএন/এএ