ঢাকা: ‘এক একটি হাত মনে হয় ১০ কেজি ওজন। প্রচণ্ড ভারী লাগে।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের পঞ্চম তলার ৫১৫ নম্বর কক্ষের বেডে শুয়ে কথাগুলো বলছিলেন ‘ট্রি-ম্যান’ রোগে আক্রান্ত আবুল হোসেন বাজনাদার।
আবুল হোসেন বলেন, আজ বিকেলে মাছ দিয়ে ভাত খেয়েছি। প্রতিবারের মতো মা আজও খাইয়ে দিয়েছে। মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। সে আমাকে বলেছে, আমি ভালো হয়ে যাবো।
একটু থেমে আবুল হোসেন আবার বলতে থাকেন, ১০ বছর ধরে এই রোগ বহন করছি। কখনও নিরাশ হইনি। ভেঙে পড়িনি। আমি আশাবাদী, আমি একদিন সুস্থ হবোই!
এর আগে, শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিতে আসেন আবুল হোসেন। এ রোগটিকে বিরল রোগ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
এরপরই সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসেন বিরল রোগে আক্রান্ত এ মানুষটি। এরপর থেকেই তাকে দেখতে আসেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তারা তাকে সান্ত্বনা দিয়েছেন।
এ নিয়ে আবুল হোসেন বলেন, ঢামেক বার্ন ইউনিটে ভর্তি হওয়ার পর থেকে অনেকেই আমাকে দেখতে এসেছেন। আজ সকালে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আমাকে দেখতে এসেছিলো। তারা আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছে।
এভাবে তারা আবারও আসবে যেদিন আমি সুস্থ হবো, যোগ করেন তিনি।
এদিকে, রোববার দুপুরে ট্রি-ম্যান রোগে আকান্ত আবুল হোসেনের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড করেছে ঢামেক কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রফেসর ডা. মো. আবুল কালামকে প্রধান করে ছয় সদস্যের এ মেডিকেল বোর্ড করা হয়।
ছয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- প্রফেসর ডা. সামন্ত লাল সেন, প্রফেসর ডা. মো. সাজ্জাদ খন্দকার, প্রফেসর ডা. রায়হানা আওয়াল, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. প্রফেসর খান মো. আবুল কালাম আজাদ ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. এমদাদুল হক।
পৃথিবীতে বাংলাদেশসহ এখন পর্যন্ত হাতেগোনা কয়েকজনকে এ রোগে আক্রান্ত হতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ায়, রোমানিয়া ও সর্বশেষ বাংলাদেশে দেখা গেলো।
** আঙুল থেকে গাছের শেকড়! বাংলাদেশে ট্রি-ম্যান রোগ
** ট্রি-ম্যানে আক্রান্ত আবুলের চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৬
এজেডএস/আরএইচএস/এসএস