ঢাকা: তিন তলা ভবনে অবস্থিত নগর মাতৃসদনটির নিচ থেকে দুই তলা পর্যন্ত বিশাল সাইন বোর্ড। তাতে বড় হরফেই লেখা রয়েছে ‘২৪ ঘণ্টা খোলা’।
প্রধান সড়ক থেকে হাজী কাদেম আলী রোড ধরে এগিয়ে গেলে ডানে পড়বে ‘মুগদা নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র’টি। সামনে আরও ৫টি সাইন বোর্ড। তাতেও বড় হরফে লেখা ২৪ ঘণ্টা খোলা। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো আলামত পাওয়া গেলো না।
বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত সাড়ে ১২টায় গিয়ে দেখা গেলো সবকিছু বন্ধ। সীমানা প্রাচীরের পকেট গেটটি খোলা। প্রবেশ পথের (বাম দিকে) প্রথমেই রয়েছে অভ্যর্থনা কক্ষ। তাতে ঝুলছে বিশাল তালা। এরপর রয়েছে রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র। সেটিও তালাবন্ধ।
রক্ত পরিসঞ্চালন কক্ষটির সামনে থেকে সিড়ি উঠে গেছে দ্বিতীয় তলায়। সিড়ি দিয়ে উপরে উঠবার কোনো সুযোগ নেই। কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে আটকানো। সিড়ির ডান পাশে রয়েছে কাউন্টার। কাউন্টারও খা খা করছে। কোনো লোকজন নেই। কাউন্টারের সামনে খালি জায়গাটিতে রাখা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স। সেখানেও প্রবেশের কোন সুযোগ নেই।
প্রায় ঘণ্টা খানেক ডাকাডাকি করেও কাউকে পাওয়া গেলো না। ভেতরে কেউ যে আছে তার কোনো সাড়া শব্দ মিলল না। অথচ হাসপাতালিটির চারদিকে নামের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা খোলা শব্দটিও সমানভাবে ব্রান্ডিং করা হয়েছে। সাইনবোর্ডে থাকা ৭২৭২৩৮৫ নম্বরে একাধিক দফায় ফোন দিলেও কেউ সাড়া দিলেন না।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন‘র এই ‘নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র’টির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে পপুলেশন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (পিএসটিসি) নামের একটি এনজিও। সাইন বোর্ড থাকা পিএসটিসির প্রধান কার্যলয়ের নম্বরে ( ৮৩২২৫৬৯) ফোন দিয়েও কাউকে পাওয়া যায় নি।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, শিশু স্বাস্থ্যসেবা ও টিকা দান, পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম, প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণ/যৌনবাহিত রোগের চিকিৎসা, এইচআইভি ও এইডস বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রাথমিক সনাক্তকরণ, বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্যসেবা, অপুষ্টিজনিত রোগের চিকিৎসা, সংক্রামক ও সাধারণ রোগের চিকিৎসা, বিনামূল্যে যক্ষ্মা রোগ সনাক্তকরণ ও চিকিৎসা, চক্ষু রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা ও ছানি সনাক্তকরণ, নির্যাতিত নারীদের সহায়তা প্রদান, যোগাযোগের মাধ্যমে আচরণগত পরিবর্তন ও
ল্যাবরেটরি সুবিধা প্রদান করার কথা।
রাজধানীতে এর শাখা রয়েছে ১৭টি। চব্বিশ ঘণ্টা সেবা প্রদানের কথা বলা হলেও দিনের বেলাতে সীমাবদ্ধ থাকে কার্যক্রম।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬
এসআই/আরএইচএস