সিলেট: যাদের এখনো ডায়াবেটিস হয়নি, তারা একটু সচেতন হলেই এ রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আ ফ ম কামাল।
তিনি বলেন, ডায়াবেটিক একটি দীর্ঘ মেয়াদী, অবক্ষয়ী ও ব্যয়বহুল রোগ।
তবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে সম্পূর্ণ সুস্থ ও কর্মঠ থাকা সম্ভব। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের মত সব মানুষকেই এ রোগ সম্পর্কে এবং এ রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে জানা, জীবনযাত্রার ত্রুটিগুলো পরিহার করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সুস্থ জীবন নিশ্চিত করা উচিত।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সিলেট ডায়াবেটিক হাসপাতালের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথাগুলো বলেন।
সিলেট ডায়াবেটিক সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য সাংবাদিক সৈয়দ সুজাত আলীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস দ্রুত বাড়ছে। এশীয় দেশগুলোতে এর প্রকোপ তুলনামুলকভাবে বেশী। অব্যাহত নগরায়নের ফলে পরিবর্তিত জীবনযাপন ও খাদ্যাভাসের কারণে এ ধরনের রোগের সংখ্যা বাড়ছেই। ভয়ানক আকারে বাড়ছে প্রি-ডায়াবেটিস এবং তা থেকে ডায়াবেটিসে রূপান্তর হচ্ছে। বিরাজমান এ অবস্থা সচেতনতার সঙ্গেই মোকাবেলা করতে হবে।
সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. এ কে এম জিয়াউল হকের পবিত্র কোরআন থেকে তেলোওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ টি এম জাফর আহমদ।
আলোচনায় সভায় বক্তারা আরও বলেন, মেদ-বহুল শিশু-কিশোর তরুণরাই এতে আক্রান্ত হচ্ছে বেশী। ফাস্ট ফুডসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যালরি বহুল খাবার খাওয়ার কারণে তাদের ওজন যাতে মাত্রাতিরিক্ত না হয় সেদিকে অধিকতর খেয়াল রাখতে হবে।
একই সঙ্গে শিশুরা যাতে শ্রমবিমুখ না হয় এবং অপুষ্টিতে না ভোগে সেদিকেও বিশেষভাবে নজর দিতে এবং রাখতে হবে।
এছাড়া ধুমপানসহ সব ধরনের তামাক গ্রহণ ডায়াবেটিসের ভয়াবহতা এবং জটিলতা অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়। ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতন না হলে এবং এ রোগ নিয়ন্ত্রণ না করলে যে কোনো ডায়াবেটিক রোগীর কিডনি, চোখ, হৃদপিন্ড, পা ইত্যাদি মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হতে পারে বলে জানান বক্তারা।
বাংলাদেশে প্রায় এক কোটি লোক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এ রোগ সম্পর্কে সচেতনতা এবং যথাযথ চিকিৎসার অভাবে অসংখ্য লোক অন্ধত্ব ও পঙ্গুত্ব বরণ করে অকালে মৃত্যুবরণ করছে। কাজেই ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করতে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন বক্তারা।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিলেট ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লোকমান আহমদ, কোষাধ্যক্ষ শিবব্রত ভৌমিক চন্দন, ডা. রাশেদা চৌধুরী। সিলেট ডায়াবেটিক সমিতি কর্তৃক গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে ছিলো র্যালি, বিনামূল্যে ডায়াবেটিক শনাক্তকরণ ও আলোচনা সভা।
বাংলাদেশ সময়: ০২৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০১৬
এনইউ/এসএইচ