ঢাকা: হাই ব্লাডপ্রেসার বা উচ্চরক্তচাপের আরেক নাম হাইপারটেনশন। গুরুতর এ স্বাস্থ্য সমস্যাটি ডেকে আনতে পারে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও কিডনি ফেইলরের মতো মারাত্মক ঝুঁকি।
রক্তচাপ যদি ১৪০/৯০ বা এর ওপরে থাকে তবে তা উচ্চরক্তচাপ।
উচ্চরক্তচাপের সাধারণ কারণগুলো হচ্ছে- স্থূলতা, বংশগত, অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন, লবণ বেশি খাওয়া, ব্যায়াম না করা, স্ট্রেস, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ও ব্যথানাশক ওষুধ সেবন, কিডনি অসুখ, অ্যাড্রিনালিন সমস্যা ইত্যাদি।
হাইপারটেনশনের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। তবে প্রাকৃতিক সহজলভ্য কিছু উপাদান দিয়েও এর প্রতিকার সম্ভব।
তরমুজের বিচি
তরমুজের বিচিতে রয়েছে কিউকার্বোসিট্রিন নামক এক উপাদান যা রক্তের সূক্ষ্ম নালিগুলোকে বিস্তীর্ণ করে। পাশাপাশি এটি কিডনির কার্যপ্রণালী উন্নীত করে। ২০১০ সালের ফ্লোরিডা স্টেট পাইলট স্টাডিতে বলা হয়, ভ্যাসোডাইলেটরি ইফেক্ট রয়েছে বলে তরমুজের বিচি রক্তচাপ কমায়।
• শুকনো তরমুজের বিচি ও পোস্তদানা সমপরিমাণে গুঁড়া করুন। একসঙ্গে মিশিয়ে এয়ার টাইট বয়ামে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় খালিপেটে এক চা চামচ করে খান।
• এক কাপ গরম পানিতে দুই চা চামচ তরমুজের বিচির গুঁড়া দিয়ে একঘণ্টা রেখে দিন। ছেঁকে সারাদিনে অল্প অল্প করে কয়েকবারে পান করুন।
লেবু
লেবু রক্তনালি নমনীয় রাখে ও কাঠিন্য দূর করে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবুর রস প্রতিদিন পান করে রোধ করা যেতে পারে হার্ট ফেইলর। ভিটামিন সি হচ্ছে এমন একটি এন্টি-অক্সিডেন্ট যা ফ্রি রেডিক্যালসের ক্ষতিকর প্রভাব অপসারণ করতে সক্ষম। রোজ সকালে খালিপেটে এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে অর্ধেক লেবুর রস দিয়ে পান করুন। চিনি বা লবণ ব্যবহার করবেন না।
রসুন
রসুন কাঁচা বা রান্না করা দুটোই রক্তচাপ হ্রাস করে। এটি নাইট্রিক অক্সাইড ও হাইড্রোজেন সালফাইড উৎপাদনের মাধ্যমে রক্তনালিকে শিথিল করে।
• প্রতিদিন দুই কোয়া রসুন খান। রসুনের হাইড্রোজেন সালফাইড রক্তপ্রবাহ ভালো রাখে, গ্যাস কমায় ও হৃৎপিণ্ডের চাপ হ্রাস করে। কাঁচা রসুন খেলে গলা বা মুখ জ্বালা করতে পারে। সেক্ষেত্রে গরম দুধে রসুন কুচি দিয়ে খান।
• দিনে দু’বার চার চা-চামচ পানিতে পাঁচ/ছয় ফোঁটা রসুনের রস দিয়ে খান।
কলা
পটাশিয়ামে পরিপূর্ণ কলা সোডিয়ামের প্রভাব কমিয়ে দেয়। কলার সঙ্গে খেতে পারেন অ্যাপ্রিকট, কিশমিশ, কমলার রস, মিষ্টি আলু, ফুটি ইত্যাদি।
নারকেলের পানি
যাদের হাইপারটেনশন রয়েছে তাদের প্রচুর পানি পান করা উচিত। দিনে অন্তত ১০ গ্লাস পানি তো অবশ্যই। নারকেলের পানি রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে বিশেষ উপকারি। ২০০৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নারকেলের পানি পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন সি তে সমৃদ্ধ। এটি সিস্টোলিক ব্লাড প্রেসার কমায়।
পেঁয়াজের রস
কোয়ার্সটিন নামক এন্টি-অক্সিডেন্ট ফ্লেভোনল রয়েছে তাই পেঁয়াজ রক্তচাপ কমায়। প্রতিদিন একটি মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ খান। এছাড়াও টানা এক সপ্তাহ দিনে দু’বার দুই টেবিল চামচ করে পেঁয়াজের রস ও মধু দিয়ে তৈরি মিশ্রণ খান।
মেথি
মেথিতে রয়েছে হাই ফাইবার ও পটাশিয়াম।
• দেড় কাপ পানিতে দুই চা চামচ মেথি দিয়ে ৩/৪ মিনিট সিদ্ধ করুন। ছেঁকে পান করুন।
• মেথি গুঁড়া করে বোতলে সংরক্ষণ করুন। সকালে ও বিকেলে খালিপেটে এক চা চামচ মেথি পানিতে পেস্ট করে খান। রক্তচাপ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে টানা দুই/তিন মাস এভাবে খেতে হবে।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৬ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৬
এসএমএন/এএ