ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

খুলনায় চিকিৎসকদের ধর্মঘটে রোগীদের দুর্ভোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১৬
খুলনায় চিকিৎসকদের ধর্মঘটে রোগীদের দুর্ভোগ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: খুলনায় এক মেডিকেল অফিসারকে পিটিয়ে আহত করার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে স্থানীয় সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসকদের ধর্মঘট চলায় চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারও রোগী এবং তাদের স্বজনরা।



শনিবার (০৫ মার্চ) সকাল থেকে খুলনা জেলা ও উপজেলায় এ ধর্মঘট কর্মসূচি শুরু হয়েছে। যা চলবে রোববার (০৬ মার্চ) পর্যন্ত। এর আগে বৃহস্পতিবার (০৩ মার্চ) ধর্মঘট পালন শুরু হয়। শুক্রবার বিরতির পর ফের এই ধর্মঘট শুরু হলো।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা শাখা, প্রাইভেট মেডিকেল প্রাক্টিশনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমপিএ) ও প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিসিডিওএ) একযোগে এ ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছে।

খুলনার তেরখাদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসারকে পিটিয়ে আহত করায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম অহিদুজ্জামানের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এ ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছেন চিকিৎসকরা।

বাংলাদেশ মেডিকেল  অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. বাহারুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, তেরখাদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত অবস্থায় চিকিৎসককে মারধরে জড়িতরা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাদের গ্রেফতারে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না প্রশাসন। বরং আসামিরা ফোনে হুমকি দিচ্ছেন। এ কারণে চিকিৎসকেরা ধর্মঘট পালন করছেন।
 
রোববারের মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতার করা না হলে বিএমএ খুলনা জেলা শাখা আরও  কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলেও জানান তিনি।

বাহার বলেন, চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেফতার দাবিতে চিকিৎসকরা বিক্ষোভ সমাবেশ এবং সংবাদ সম্মেলন করেন। কিন্তু মারধরকারী  ও তার সহযোগীরা গ্রেফতার না হওয়ায় চিকিৎসকরা বাধ্য ফের কর্মসূচি দিয়েছেন।

বিশেষ বিবেচনায় ধর্মঘট চলাকালীন শুধু জরুরি সেবা চালু থাকবে বলেও জানান তিনি।

বিএমএ সূত্রে জানা যায়, রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে রোগী দেখার জন্য তেরখাদা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামানের বাড়িতে যেতে বলেন কয়েকজন লোক। হাসপাতাল ছেড়ে বাড়িতে যাওয়া সম্ভব নয় জানালে চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামানসহ বেশ কিছু লোক হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। পরে আহত অবস্থায় তাকে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় চেয়ারম্যানকে আসামি করে মামলা করেছেন ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন।

মামলার পরও প্রশাসন তাকে গ্রেফতার করছে না। যে কারণে বিএমএ’র শুক্রবার রাতে জরুরি সভায় ডেকে শনি ও রোববার ধর্মঘটের ডাক দেয়। এর আগেও জরুরি সভা ডেকে বৃহস্পতিবার ধর্মঘট পালন করা হয়।
 
এদিকে, ধর্মঘটের ফলে খুলনার সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকায় রোগীরা এসে ফিরে যাচ্ছেন। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা।

শনিবার সকালে প্রিন্স হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে রূপসা থেকে আসা রোগীর স্বজন আবদুল্লাহ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ধর্মঘট থাকায় আজ (শনিবার) এসেছি। এসে দেখি হাসপাতালের গেট বন্ধ। আজও নাকি ডাক্তাররা আসবেন না। ’

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে অনেক রোগী। এ সমস্যার সমাধান হওয়া প্রয়োজন। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৬/ আপডেট: ১১১০ ঘণ্টা,
এমআরএম/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।