ঢাকা: ইতোমধ্যে রোগীদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে ফি নেওয়া হয়েছে কলকাতার ডা. গৌতম খাস্তগীরের জন্যে। গত বছর এ ফি ছিল তিন হাজার টাকা।
কলকাতার প্রজনন বিশেষজ্ঞ এবং গাইনোকোলজিক্যাল এন্ডোস্কোপিক সার্জন পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশের রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা অভিযোগ রয়েছে ডা. খাস্তগীরের বিরুদ্ধে। যেখানে বাংলাদেশেও কোনো চিকিৎসকের ফি এক হাজার টাকার ওপরে নয়, সেখানে রোগীদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে ফি নিচ্ছেন এই চিকিৎসক।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকার উপকণ্ঠে একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রোগী দেখার শিডিউল ছিল ডা. খাস্তগীরের। বিএমডিসি’র অনুমোদন না নিয়ে আগেও বাংলাদেশে রোগী দেখার বিষয়টি বাংলানিউজে প্রকাশিত হলে এ সফর আপাতত স্থগিত করেছেন তিনি। তবে এরই মধ্যে ওই প্রতিষ্ঠানে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে কয়েকজন রোগী তার অ্যাপয়েনমেন্ট নিয়েছেন।
ওই হাসপাতালের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, গত সফরে রোগী প্রতি ৩ হাজার টাকা ফি নেওয়া হয়েছে। এবার ডা. খাস্তগীর ২ হাজার টাকা ফি বৃদ্ধি করতে বলেছেন। তাই ৫ হাজার টাকা করেই নেওয়া হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বরের শিডিউল স্থগিত হলেও দুর্গাপূজার ছুটিতে বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে তার।
তবে বিদেশি চিকিৎসকদের স্বল্পমেয়াদি প্রক্রিয়ায় দেশে ফি গ্রহণ করে রোগী দেখা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন বিএমডিসি'র রেজিস্ট্রার ডা. মো. জাহেদুল হক বসুনিয়া।
তিনি বলেন, আইনানুসারে ডা. খাস্তগীর বিএমডিসি’র অনুমোদন নিয়ে রোগী দেখলেও তিনি কোনো ফি নিতে পারবেন না।
ডা. বসুনিয়া বলেন, ‘দু’ভাবে বিদেশি চিকিৎসকদের দেশে রোগী দেখার অনুমোদন দেওয়া হয়- দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি। দীর্ঘমেয়াদি বা ট্রান্সফার অব টেকনোলজি হিসেবে দীর্ঘ মেয়াদে আসেন চিকিৎসকরা। আবার ১ থেকে ৭ দিনের জন্যেও স্বল্পমেয়াদে আসতে পারেন। তবে স্বল্প মেয়াদে কোনো ফ্রি ক্যাম্পে তিনি যোগ দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে রোগীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া যাবে না এবং ফ্রি রোগী দেখার বিষয়টি গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাতে হবে’।
‘তবে একদিনের জন্যে এলেও তার জন্যে বিএমডিসি'র অনুমোদন নিতে হবে। বিএমডিসি'র অনুমোদন না নিয়ে রোগী দেখলে স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেক্ষেত্রে থানাকে আমরা বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে বলে থাকি’- বলেন বসুনিয়া।
‘এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও বিষয়টি জানাতে হয়। আর যদি দীর্ঘমেয়াদে আয়ের জন্যে আসেন, তবে সেক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে তার পারিশ্রমিকের বিষয়টিও নির্ধারণ করতে হয়’।
কলকাতার ডা. গৌতম খাস্তগীরের কোনো মেয়াদেরই নিবন্ধন নেই বলে বাংলানিউজকে জানান বিএমডিসি'র প্রশাসনিক কর্মকর্তা বোরহানউদ্দিন। তিনি বলেন, দেশের কোনো মেডিকেল কলেজ বা হাসপাতালে বা অন্য কোথাও রোগী দেখার জন্যে ডা. গৌতম খাস্তগীর আবেদন করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৬
এমএন/এএসআর
** বাংলাদেশে রোগী বাণিজ্যের সফর স্থগিত করলেন খাস্তগীর
** বিএমডিসি’কে জানাননি খাস্তগীর, ব্যবস্থা নিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর
** কলকাতার ডাক্তার গৌতম খাস্তগীরের প্রতারণার ফাঁদ বাংলাদেশে
** কলকাতার ডাক্তার গৌতম খাস্তগীর ৫ মিনিটে ভিজিট নেন ৫ হাজার!
** সুনাম কুড়াতে বৃত্তির নামে ডা. গৌতমের প্রতারণা