ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

এইচডিইউতে আগের চেয়ে সুস্থ ডা. এম আর খান

মাজেদুল নয়ন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৬
এইচডিইউতে আগের চেয়ে সুস্থ ডা. এম আর খান

ঢাকা: দেশের প্রখ্যাত শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এম আর খান কিছুটা সুস্থ হয়েছেন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তাকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) থেকে হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) স্থানান্তর করা হয়।

বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই সেন্ট্রাল হাসপাতালের কেবিনে ভর্তি ছিলেন অধ্যাপক এম আর খান। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রায় এক মাস আগে উনাকে আইসিইউ’তে নেওয়া হয়। জ্বর, ইনফেকশন ছাড়াও তিনি নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন।

গত বুধবার (১২ অক্টোবর) শিশু স্বাস্থ্য ও সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য জাতীয় অধ্যাপক এম আর খানকে স্বর্ণ পদক প্রদান ও আজীবন সম্মাননা দেয় বাংলাদেশ বিপিএ। ২০০৯ সালে একুশে পদক এবং ২০১৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারের গৌরব অর্জন করেন এই শিশু বিশেষজ্ঞ।

অধ্যাপক এম আর খানের সঙ্গে শেষ সাক্ষাতের বিষয়ে বিপিএর সভাপতি ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, গত ৮ থেকে ১০ দিন আগে স্যারকে আইসিইউ থেকে এইচডিইউতে স্থানান্তর করা হয়; যা আইসিইউ-এর আগের ধাপ। তিনি এখন খেতে পারছেন, তাকাচ্ছেন।

বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা এবং ঠাণ্ডাজনিত ইনফেকশনে ভুগছিলেন ৮৯ বছর বয়সী এই চিকিৎসক, জানান ডা. শহীদুল্লাহ।

তিনি বলেন, জাতীয় অধ্যাপক এম আর খান আমাদের গর্ব। তিনি শিশু স্বাস্থ্যসহ দেশের সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিশেষ অবদান রেখেছেন। সমাজ সেবায়ও রয়েছে তার বড় অবদান।

গত জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এম আর খানকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। আগস্টে ঢাকায় ফেরেন তিনি। এরপর থেকে সেন্ট্রাল হাসপাতালেই রয়েছেন।

এম আর খান নামে সর্বাধিক পরিচিত হলেও এই প্রথিতযশা অধ্যাপকের পুরো নাম মো. রফি খান। আর পরিবারে তিনি খোকা নামেই পরিচিত। ১৯২৮ সালের ১ আগস্ট সাতক্ষীরায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

১৯৫২ সালে কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করার পর সাতক্ষীরায় ফিরে যান এম আর খান। এরপর উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য ১৯৫৬ সালে সস্ত্রীক বিদেশে পাড়ি জমান। সেখানে পড়াশুনা শেষ করে ১৯৫৭ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার কেন্ট এবং এডিনবার্গ গ্রুপ হাসপাতালে যথাক্রমে সহকারী রেজিস্টার ও রেজিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৬২ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৬৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অব মেডিসিন পদে যোগ দেন। ১৯৬৪ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক (শিশুস্বাস্থ্য) পদে যোগদান করেন। ১৯৬৯ সালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগে যোগ দেন এবং এক বছরের মধ্যেই অর্থাৎ ১৯৭০ সালে তিনি অধ্যাপক হিসাবে পদোন্নতি পান।

১৯৭৮ সালের নভেম্বরে তিনি ঢাকা শিশু হাসপাতালে অধ্যাপক ও পরিচালকের পদে যোগদান করেন। একই বছরে পুনরায় তিনি আইপিজিএমআর-এর শিশু বিভাগের অধ্যাপক নিযুক্ত হন এবং দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮ সালে অধ্যাপক ডা. এম আর খান তার সুদীর্ঘ চাকরি জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

পেনশনের টাকা দিয়ে মা ও শিশুদের জন্য গড়ে তোলেন ডা. এম আর খান ও আনোয়ারা ট্রাস্ট। এ ট্রাস্ট থেকে শিশু স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় অনুদান, হাসপাতাল ও স্কুল প্রতিষ্ঠা, মেধাবী ও গরিব শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভালো অবদানের জন্য দেয়া হয় ডা. এম আর খান ও আনোয়ারা ট্রাস্ট স্বর্ণপদক।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৬
এমএন/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।