ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

দরিদ্র রোগীদের ‍চিকিৎসার্থে প্রয়োজন সমন্বিত অংশগ্রহণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৬
দরিদ্র রোগীদের ‍চিকিৎসার্থে প্রয়োজন সমন্বিত অংশগ্রহণ ছবি:শাকিল-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

দরিদ্র রোগীদের ‍চিকিৎসার্থে সমন্বিত সহায়তার প্রয়োজন বলে আশা প্রকাশ করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

ঢাকা: দরিদ্র রোগীদের ‍চিকিৎসার্থে সমন্বিত সহায়তার প্রয়োজন বলে আশা প্রকাশ করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি বলেছেন, দরিদ্র রোগীদের চিকিৎসার্থে সহায়তা দিতে সবার নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজের আয় অনুযায়ী সহযোগীর হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।

সেক্ষেত্রে আয় বেশি হলেও সাহায্যের পরিমাণও বড় হবে। এক পর্যায়ে দরিদ্র রোগীদের জন্য পরিমাপযোগ্য তহবিল সংগ্রহ হবে। এই তহবিল সংগ্রহে প্রয়োজন সকলের সমন্বিত অংশগ্রহণ।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

দরিদ্র রোগীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও চিকিৎসার্থে সহায়তা বিষয়ক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে পেশেন্ট ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন।

এ সময় তিনি আরো বলেন, ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো সেবা নিতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হয়েছে।

এর মধ্যে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সহকারী না পাওয়া, দালাল কর্তৃক হয়রানির শিকার, বেসরকারি ক্লিনিক/ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়ার পরামর্শ, চিকিৎসার সময়ে ডাক্তারের কক্ষে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির উপস্থিতি থাকা দুর্নীতির অন্যতম কারণ।

তিনি বলেন, অনেক সময় সেবা ট্রলি, হুইল চেয়ার ব্যবহার, অপারেশন সেবা, প্রসূতি সেবা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, শয্যা পাওয়াসহ বিভিন্ন সেবা পেতে ঘুষ বা নিয়ম বহির্ভূত অর্থ আদায় করা হচ্ছে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের মোট চিকিৎসকদের ৬১ দশমিক ৪ বেসরকারি চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত। সর্বশেষ ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস পযন্ত বাংলাদেশে নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩ হাজার ৩৪১টি। যার মধ্যে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যা ৪ হাজার ২৮০টি এবং রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের সংখ্যা ৯ হাজার ৬১টি। এ সকল প্রতিষ্ঠান হতে গাইনি ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা, মিডিসিন, রোগ-নির্ণয়, বিশেষায়িত সেবা দেয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, সরকার থেকে স্বাস্থ্য সেবায় প্রতি বছর জনপ্রতি ৩৯০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এটা ২ হাজার ৬৫২ টাকা হওয়া উচিৎ। বাংলাদেশের মানুষ খানাপ্রতি গড় আয়ের কমপক্ষে ২০ শতাংশ স্বাস্থ্য সেবার জন্য ব্যয় করে, যা দারিদ্র্য সীমার নীচের খানার ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশের বেশি।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পৃথিবীর যে ১০টি দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার বেশি বাংলাদেশ তার একটি। বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণ- সময়ের আগে জন্মানোর জটিলতা (২০ শতাংশ), নিউমোনিয়া (১৫ শতাংশ), জন্মকালীন বা প্রসবকালে নানা জটিলতায় (১৫ শতাংশ), সেপসিস ও মেনিনজাইটিস (১৪ শতাংশ), জন্মগত ত্রুটি (৯শতাংশ), ডায়রিয়া (৬ শতাংশ) এবং নানা আঘাতজনিত কারণে ( ৬ শতাংশ) পাঁচ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই শিশুরা মারা যায়।

প্রফেসর ডা. কাজী শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএসএমএমইউর মেডিসিন অনুষদের ডিন প্রফেসর এবিএম আব্দুল্লাহ, অ্যাডভোকেট ড. মো. ইউনুস আলী আকন্দ,আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডা. রাকিবুল ইসলাম লিটু বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এলিনা খান, সাংবাদিক আশিস সৈকত প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৬
জেডএফ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।