বসেছে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ইত্যাদি দেশ থেকে আনা অত্যাধুনিক সব স্ক্যানিং আর থেরাপি মেশিন। বিভিন্ন নামকরা হাসপাতাল আর ইনস্টিটিউটের অভিজ্ঞজনদের নিয়ে গড়া এই ইউনিটকে এখন দেশের সেরা ক্যানসার সেন্টার বলছেন যে কেউ।
এখানকার সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, হরমোনথেরাপি, ইমিওনোথেরাপি আর টারগেটেড থেরাপির সর্বাধুনিক বিশাল আয়োজনে মুগ্ধ হচ্ছেন সবাই। প্রশংসা করছেন এখানকার লিনিয়ার এ্যাক্সেলারেটর, ইলেকট্রনিক পোর্টাল ভিশন ইমেজিং ডিভাইস, সিটি সিম্যুলেটরের। ডাইরেক্টর ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড প্ল্যানিং ডা. আনওয়ারুল কাদের নাজিম বেশ ভালোভাবেই বুঝিয়ে দিলেন এসব মেশিনের কার্যক্রম।
বিশ্বখ্যাত ক্যানসার সেন্টার সুইজারল্যান্ডের বেলাঞ্জনা পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা ভালোই কাজে লাগিয়েছেন এনাম মেডিকেলের স্বপ্নদ্রষ্টা স্থানীয় এমপি এনামুর রহমান। প্রায় ১২০ কোটি টাকা খরচে এই ক্যানসার সেন্টার গড়ে তুলেছেন তিনি।
দেশে আরো কয়েকটি হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও এনাম ক্যানসার সেন্টারই এখন সবার সেরা। ভারতের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. সোমনাথ দে এখন স্থায়ী হয়েছেন এখানেই। তাই টাটা মেমোরিয়াল বা ভেলোরে যারা ক্যানসার চিকিৎসার জন্য যেতেন তারা এখন হাতের কাছেই বিশ্বমানের চিকিৎসা পাচ্ছেন। কিন্তু খরচ ভারতের অর্ধেক তো বটেই।
দীর্ঘদিন ক্যানসার নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন চিকিৎসকরা এখন সেবা দিচ্ছেন এনাম ক্যানসার সেন্টারে। ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান মিলিয়ে এখানকার লোকবল ৫০ এরও ওপরে।
সবার কথা, কম খরচে উন্নত সেবা পেতে আসতে হবে এনামে। দেশের ভেতরে বিশ্বমানের তো বটেই, ক্যানসারের সেরা চিকিৎসারও নিশ্চয়তাও দিচ্ছে এনাম ক্যানসার সেন্টার।
ডা. সোমনাথ দে এর কথায়, এখানকার ব্যবস্থাপনা অনেক সুন্দর, অনেক সিসটিমেটিক। এখানকার উন্নত প্রযুক্তির তুলনায় খরচও বেশ কম। এখানকার ডাক্তাররা নিবেদিত প্রাণ। খরচ মিনিমাইজ করতে ন্যুনতম ইনভেস্টিগেশন করে যথাযথ পরামর্শ দেওয়া হয় এখানে।
ঢাকার উপকণ্ঠে শিক্ষা, বাণিজ্য ও শিল্প নগরী সাভারে ২০০৩ সালে গড়ে ওঠা এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অনেক আগেই হয়ে উঠেছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের আশা-ভরসা-আশ্রয়ের গন্তব্য। এই হাসপাতালের বেড, কেবিনের ভাড়া আর সব বেসরকারি হাসপাতালের চেয়ে অনেক কম।
ক্যানসার সেন্টারেও তার ব্যত্যয় হয়নি। এখানে চিকিৎসার জন্য এসে টাকার অভাবে কোনো রোগী ফিরে গেছেন তার নজির নেই। কম খরচে যথাযথ রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। নানা কারণে রোগীদের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে ওঠা এনাম মেডিকেল নির্ভরতার ধারা বজায় রেখেছে ক্যানসার সেন্টারেও।
কার্যত ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসে হতাহতদের নিরন্তর সেবা দিয়ে সারাবিশ্বের নজরে আসে এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। সেই জাতীয় দুর্যোগে রাত-দিনের হিসাব ভুলে টানা সেবা দিয়ে যান এখানকার চিকিৎসক-ছাত্র-শিক্ষকরা। ওই ঘটনার পর ছাত্র ও অভিভাবকদের আগ্রহ বেড়ে যায় এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতি। সঙ্গে এর প্রতিষ্ঠাতা ডা. এনামুর রহমানের সহজাত সেবার মানসিকতা আর আন্তরিকতা হাসপাতালটির ধারাবাহিক উন্নতির পথ রচনা করে দেয়। ক্যানসার সেন্টার গড়ে রোগীদের আস্থার প্রতিদান যেনো আরো ভালোভাবেই দিতে চলেছে এনাম মেডিকেল।
বেসরকারি হলেও এই হাসপাতালে রোগির ভিড় সরকারি হাসপাতালের মতো। উপরন্তু আর সব হাসপাতালের বহি:বিভাগ কেবল দিনের প্রথম অর্ধে খোলা থাকলেও এনাম মেডিকেলের বহি:বিভাগ খোলা থাকে দিনের উভয় ভাগেই। আর দিনের দ্বিতীয় ভাগে রোগির গিজগিজে ভিড়ে তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না এখানকার বহি:বিভাগে। নতুন চালু হওয়া ক্যানসার সেন্টারও তো ফুরসতহীন ব্যস্ততার পথেই হাঁটছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৬
জেডএম/