সুজাত কথা কম বলে, ভাত খায় একদিন পর পর। সুজাতকে দেখে এক ব্যক্তি বলে ফেলেন, ‘ওর বয়স কতো? ওরে তো দেখতে বৃদ্ধ মানুষের মতো লাগে!’
বৃহস্পতিবার (০২ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন ছোলমাইদ পূর্বপাড়ার একটি খাবারের দোকানে দেখা হয় ১৮ বছরের ‘বৃদ্ধশিশু’ সুজাত মিয়া ও তার মায়ের সঙ্গে।
সুজাতের মা সুফিয়া বেগম বাংলানিউজকে জানান, নেত্রকোনার সদর উপজেলার কেগাতী গ্রামের ভূমিহীন, সহায়-সম্বলহীন কৃষক মো. হাবি মিয়ার (৭৫) স্ত্রী তিনি। সুজাতের বর্তমান বয়স ১৮ বছর। ‘আমার দুই ছেলে। বড় ছেলে সুজাত । ছোটটার নাম মোস্তফা। সুজাত এক ও দুই দিন পর মাত্র এক-দু’চামচ ভাত খায়। অন্য শিশুদের মতো আমার কাছে কোনো বায়না ধরে না সুজাত। ’—বলছিলেন সুফিয়া।
সুজাতকে দেখলে পথচারীরা চমকে ওঠে। বয়স মাত্র ১৮ বছর হলেও দেহটা তার ছোট্ট। ওই ছোট্ট দেহটার ওপর কেউ যেন বসিয়ে দিয়েছে ৬০ বছরের বৃদ্ধের মুখ।
‘সুজাতকে ডাক্তার দেখিয়েছেন?’ প্রশ্ন করি সুফিয়া বেগমকে।
---‘নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের ডাক্তার দেখিয়েছি। ডাক্তাররা জানিয়েছেন ‘জেনেটিক ডিজঅর্ডারে’ (জিনগত ত্রুটি) আক্রান্ত সুজাত। তার চিকিৎসার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। ’
সুজাতের খালতো ভাই আবদুল মান্নান বাংলানিউজকে জানান, ‘১৮ বছর হলেও অঙ্গ-ভঙ্গি, কুঁচকে যাওয়া ত্বক, ঝুলে পড়া ঠোঁট আর প্রায় নির্জীব দেহ দেহ দেখে বৃদ্ধ মানুষের মতোই লাগে সুজাতকে।
‘সুজাতের মায়েরও বাম চোখ নষ্ট। বৃদ্ধ বাবা ও এক চোখ হারা অসহায় মা কীভাবে সুজাতের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করবেন? তাদের তো একটি বাড়ি ছাড়া কোনো জমিজমাও নেই!’
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৭
এএটি/জেএম