একই সঙ্গে শাস্তি প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মবিরতিও পালন করছেন পাশাপাশি ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।
শনিবার (০৪মার্চ) বেলা ১১টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। শাস্তিপ্রাপ্তরাসহ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বিভিন্ন ধরনের দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শজিমেকে সিরাজগঞ্জ থেকে আসা রোগী আলাউদ্দিনের ছেলে ও ২ মেয়ে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হাতে প্রহৃত হন।
পরে রোগীর স্বজনের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ তুলে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) মো. হাবিবুর রহমান খানের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের তদন্ত দলটি শজিমেকে আসেন। তদন্ত দলের অপর দুই সদস্য হলেন- বিএমডিসি’র প্রো ভিসি প্রফেসর ডা. শরফুদ্দীন আহমেদ ও স্বাস্থ্য অধিদপতরের পরিচালক (চিকিৎসা) অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুর রশিদ।
পরে উচ্চ পর্যায়ে এই কমিটি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দেন। সেই প্রতিবেদনের আলোকে উক্ত ঘটনায় ছাত্রলীগের শজিমেক শাখার সভাপতি ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. এমএ আল মামুন, সহ-সভাপতি ডা. আশিকুজ্জামান আসিফ, সাবেক সহ-সভাপতি ডা. কুতুব উদ্দিন ও ডা. নূরজাহান বিনতে ইসলাম নাজের ইন্টার্নশিপ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়।
শাস্তি শেষে তাদের চারটি ভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ শেষ করতে হবে বলেও ঘোষণা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
বৃহস্পতিবার (০২ মার্চ) বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘোষিত শাস্তির বিষয়টি জানার পর হাসপাতালের ১৩০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক একযোগে কর্মবিরতি শুরু করেন।
শুরুতে তারা অঘোষিতভাবে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখলেও শনিবার (০৪ মার্চ) মানববন্ধন কমসূচি পালনের মধ্য দিয়ে মূলত শাস্তি প্রত্যাহারের দাবির আন্দোলন প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন।
তবে হাসপাতাল প্রশাসন কর্তৃপক্ষ ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাজে ফেরাতে শুক্রবার (০৩ মার্চ) থেকে দফায় দফায় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দাবির ব্যাপারে অনড় থাকায় এখনো তাদের কাজে ফেরানো যায়নি।
ফলে চিকিৎসা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে হাসপাতালের অন্য চিকিৎসকরা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাজে ফেরাতে তাদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন হাসপাতাল প্রশাসন কর্তৃপক্ষ।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) উপাধ্যক্ষ ডা. রেজাউল আলম জুয়েল বাংলানিউজকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাজে ফেরাতে নানাভাবে চেষ্টা চলছে।
তাদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করা হচ্ছে। কিন্তু দাবির ব্যাপারে তারা অনমনীয় থাকায় আলোচনা এখনো সফল হয়নি। তবে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে অন্য চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তারা ভাগাভাগি করে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। গঠিত দুইটি মনিটরিং টিম এ ব্যাপারে সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে বলেও যোগ করেন উপাধ্যক্ষ ডা. রেজাউল আলম জুয়েল।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৭
এমবিএইচ/বিএস