সোমবার (০৬ মার্চ) সকাল ১১টায় ধানমন্ডিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের বাসায় এক বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা পরীক্ষিত চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ সময় বাংলাদেশে মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ইকবাল আর্সলান, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সহ-সভাপতি ডা. তোফাজ্জেল হোসেন চয়ন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের তিনজন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, 'ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘটের কারণে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে, রোগীদের ভোগান্তিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আরও আগেই দুঃখ প্রকাশ করা উচিৎ ছিল। '
তিনি আরও বলেন, 'রোগীদের কথা বিবেচনা করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কাজে ফিরেছেন। তাদের স্বাগত জানাই। '
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, 'আমাদের সভাপতি তাসনিম মাহমুদসহ ঢাকা শহরের কয়েকটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কয়েকজন নেতা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বাসায় গিয়েছিলাম। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি-দাওয়া পেশ করেছি। '
তিনি আরও বলেন, 'বগুড়ার ঘটনায় ইন্টার্নরা দোষী হয়ে থাকলে দুঃখ প্রকাশ করেছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদের দাবি দাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর আরোপিত শাস্তি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। '
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি (রোববার) শজিমেকে তুচ্ছ ঘটনার সূত্র ধরে সিরাজগঞ্জ থেকে আসা রোগী আলাউদ্দিনের ছেলে ও ২ মেয়ে কয়েকজন বিক্ষুব্ধ ইন্টার্ন চিকিৎসকের হাতে প্রহৃত হন।
অন্যদিকে, রোগীর স্বজনদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ তুলে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ৩ সদস্যের তদন্ত দলটি শজিমেকে যায়। উচ্চ পর্যায়ের ওই কমিটি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনের আলোকে ওই ঘটনায় ছাত্রলীগের শজিমেক শাখার সভাপতি ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. এম এ আল মামুন, সহ-সভাপতি ডা. আশিকুজ্জামান আসিফ, সাবেক সহ-সভাপতি ডা. কুতুব উদ্দিন ও ডা. নূরজাহান বিনতে ইসলাম নাজের ইন্টার্নশিপ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়।
শাস্তি শেষে তাদের চারটি ভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ শেষ করতে হবে বলেও ঘোষণা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
বৃহস্পতিবার (০২মার্চ) বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়-ঘোষিত শাস্তির বিষয়টি জানার পর হাসপাতালের ১৩০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক একযোগে কর্মবিরতি শুরু করেন।
শুরুতে তারা অঘোষিতভাবে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখলেও শনিবার (০৪ মার্চ) মানববন্ধন কমসূচি পালনের মধ্য দিয়ে মূলত শাস্তি প্রত্যাহারের দাবির আন্দোলন প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন। এরপর দেশের অন্যসব মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও আন্দোলনে যোগ দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০১৭/আপডেট: ১২৪৬ ঘণ্টা/আপডেট ১৩৪৪ ঘণ্টা
এমএন/এজেডএস/এমজেএফ/জেএম