চোখে চোখ রাখা সে-তো নয়, চোখের সে ভাষা বুঝতে হলে চোখের মত চোখ থাকা চাই। গানের এ কলির মতোই চোখের মতো চোখ না থাকলে এ ধরণীর সৌন্দর্য উপভোগ করা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশের পূর্ণ বয়স্কদের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ অন্ধত্বের কারণ হলো চোখের ছানি। ইংরেজিতে ছানিকে ক্যাটারাক্ট বলা হয়। সাধারণ মানুষ ছানিকে চোখে পর্দা পড়া বলে থাকে।
ছানি কি?
চোখে কাঁচের মত একটি স্বচ্ছ লেন্স আছে। চোখের এই স্বচ্ছ লেন্স আস্তে আস্তে অস্বচ্ছ হয়ে যাওয়াকেই ছানি বলে। ছানি হলে দৃষ্টি শক্তি আস্তে আস্তে কমে যায়। ছানি যে কোন বয়সেই হতে পারে। সাধারণত দুই ধরণের ছানি হয়ে থাকে। এগুলো হলো জন্মগত এবং অর্জিত।
চোখে ছানির কারণ:
গর্ভকালীন সময়ে মায়ের হাম, অপুষ্টি ও ডায়বেটিস হলে শিশুদের জন্মগত চোখের ছানি হয়ে থাকে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অর্জিত ছানি পড়ে। বিভিন্ন কারণে এটা হতে পারে।
১. শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ ছানিই বয়সজনিত কারণে হয়ে থাকে। বয়স বৃদ্ধি পেলে চোখের লেন্স ঘোলা হয়ে যায়।
২. আঘাত পেলে
৩. দীর্ঘদিন ধরে ষ্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করলে
৪. ডায়বেটিস রোগাক্রান্তদের ছানি হয় বেশি
ছানি হলে কী হয়:
১. চোখের দৃষ্টি শক্তি ধীরে ধীরে কমে যাবে
২. চোখে আবছা বা কুয়াশা বা ঝাপসা দেখা
৩. ছানি ম্যাচিউর বা পরিপক্ক হলে চোখ দিয়ে দেখা যাবে না
৪. চোখের মনির রং কালোর পরিবর্তে ধূসর বা সাদা দেখা যাবে
নিরাময়ে অপারেশন:
ছানির একমাত্র চিকিৎসা হল অপারেশন। সময়মত অপারেশ না করে দেরি করলে চোখ সম্পূর্ণ অন্ধ হতে পারে। এই অপারেশনের মাধ্যমে চোখের অস্বচ্ছ লেন্সটাকে ফেলে দিয়ে তার বদলে অন্য একটি কৃত্রিম লেন্স দেওয়া হয়।
বর্তমানে ছানি অপারেশনের পর একটি কৃত্রিম লেন্স ভিতরে লাগিয়ে দেওয়া হয় যাতে রোগী পূর্বের মত দেখতে পায়। কোন কোন সময় প্রয়োজনে দৃষ্টিশক্তি পরিমাপ করে চশমা ব্যবহার করা যেতে পারে।