ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ঈদে শেবাচিমে রোগীর সেবায় নার্স-নির্ভর রোস্টার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৮ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
ঈদে শেবাচিমে রোগীর সেবায় নার্স-নির্ভর রোস্টার বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের- ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: পবিত্র ঈদুল-ফিতরের বাকি আর মাত্র ২-১ দিন। এরই মধ্যে কমতে শুরু করেছে দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রোগী।

অনেকে নিজ ইচ্ছাতে হাসপাতাল ত্যাগ করছেন। আবার অনেককে চিকিৎসকের পক্ষ থেকেই ছুটি দেওয়া হচ্ছে।

এরই মধ্যে কাগজে-কলমে হাজার সজ্জার এ হাসপাতালটির বিভিন্ন ওয়ার্ড প্রায় রোগী শূন্য হয়ে পড়েছে।

শনিবার (২৪ জুন) হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, শুধুমাত্র মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ও গাইনি লেবার ওয়ার্ডে রোগীদের ভিড় রয়েছে। এই ওয়ার্ড দু’টিতে রোগীরা ফ্লোরেও রয়েছে। এছাড়া প্রায় সব ওয়ার্ডেই রোগীর সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। যেমন মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে স্বাভাবিক দিনে যেখানে রোগীরা মেঝেতেও জায়গা পেতো না, সেখানে ঈদের আগ মুহূর্তে এ ওয়ার্ডে খালি বেডের সংখ্যাই বেশি।

হাসপাতালের মহিলা সার্জারির এই ওয়ার্ডের চারটি ইউনিটে ৫৫ বেডের স্থলে শনিবার দুপুরে রোগী রয়েছে মাত্র ৩৫ জন। আর স্বাভাবিক সময়ে এ ওয়ার্ডে ১২০ জনের অধিক রোগী থাকে বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ড ইনচার্জ খুকু হালদার।

এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এস এম সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, মূলত স্বাভাবিক নিয়মে চিকিৎসক যে রোগীকে সুস্থ মনে করেন তার নাম কেটে দেন। এটাই নিয়ম। তবে ঈদের আগে মোটামুটি সুস্থ রোগীরাও হাসপাতালে থাকতে চান না তাই তারা নিজেরাই ব্যবস্থাপত্র নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন।

তিনি বলেন, ঈদ-উল-ফিতর মুসলমানদের জন্য বড় ধর্মীয় উৎসব। তবে ঈদের ছুটিতে হাসপাতালে রোগীদের সেবার জন্য এবার চিকিৎসক ও নার্সের কোনো সংকট থাকবে না। এবারের রোস্টার অনুযায়ী ঈদের আগে ২৫ জুন হাসপাতালের বহিঃবিভাগ খোলা থাকবে। ছুটি শেষে ২৮ জুন আবারও বহিঃবিভাগের কার‌্যক্রম চালু থাকবে। এছাড়াও ঈদের পরের দিন অল্প সময়ের জন্য বহিঃবিভাগে রোগীদের সেবা দেওয়া হবে। ঈদের ছুটিতে ছয়জন চিকিৎসক নিয়মিত বহিঃবিভাগে সেবা দেবেন।

ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আন্তঃবিভাগে যেসব রোগী ভর্তি থাকেন তাদের মধ্যে তিন ভাগের এক ভাগ রোগীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। শনিবার হাসপাতালে মোট ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিলো হাজার জন সেখানে দু’দিন আগেও গড়ে ভর্তির সংখ্যা ছিলো ১ হাজার ৬শ’ থেকে ১ হাজার ৮শ’ জন। ঈদের বন্ধে এ রোগীর সংখ্যা আরও কমে যাবে বলে জানান তিনি।

তারপরও যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঈদের রোস্টারে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ১৫৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে ৯০-৯৫ জন দায়িত্ব পালন করবেন। আর বরিশাল মেডিকেলে যারা অধ্যাপক-সহকারী অধ্যাপক রয়েছেন তারা এমনিতেও ঈদে বরিশাল ত্যাগ করেন না। এক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজনে তারা হাসপাতালে আসবেন।

পরিচালক বলেন, হাসপাতালের মোট ৭২৮ জন সেবিকার মধ্যে ২৭৪ জন রয়েছেন হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মালম্বী। এদের সঙ্গে আরও যোগ করে ৩০৪ জন নার্সকে নিয়ে ঈদের ছুটিতে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। একইভাবে তৃতীয় ও চুতুর্থ শ্রেণীর স্টাফদেরও দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। আশা করি কোনো সমস্যা তো হবে না। রোগীর চেয়ে সেবাপ্রদানকারীদের গড় সংখ্যা বেশি থাকবে।

এদিকে এই প্রথমবারের মতো বিপুল সংখ্যক নার্স হাজার সজ্জার এ হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন নার্সিং তত্ত্বাবধায়ক।

হাসপাতালের অপর একটি সূত্র জানিয়েছেন, মুলত চিকিৎসকের রোস্টারে গাইনি, মেডিসিন, সার্জারি, অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ডগুলোর কথা মাথায় রেখে ৬৭ জন চিকিৎসকে এ ওয়ার্ডগুলোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাকি চিকিৎসকরা অন্যান্য ওয়ার্ড ও এসব চিকিৎসকদের সহায়ক হিসেবে কাজ করবেন। তবে এবার সেবিকাদের সংখ্যা তিন শিফটের ডিউটি অনুযায়ী অনেকটাই বেশি।

এক্ষেত্রে শেবাচিমে ঈদের ছুটিতে রোগীরা নার্স নির্ভর সেবা পেতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সিনিয়র স্টাফ নার্সরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্ট‍া, জুন ২৪, ২০১৭
এমএস/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।