ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

আলু স্বাস্থ্যকর খাবার, ছোলাসহ পুড়িয়ে খান 

স্বাস্থ্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৭ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৭
আলু স্বাস্থ্যকর খাবার, ছোলাসহ পুড়িয়ে খান  ছোলাসহ পোড়ানো আলু

হ্যাঁ, পোড়ানো আলুকে আপনি স্বাস্থ্যকর খাবার বলতে পারেন, বিশেষ করে যখন খাচ্ছেন আঁশসম্মৃদ্ধ ছোলাসহ। তবে পাতাযুক্ত সব্জিগুলোর চেয়েও এতে শ্বেতসারের পরিমান বেশি থাকে।

আর সে কারণে স্রেফ আলুই একমাত্র খাদ্য হিসাবে না থাকা ভালো।

আলু খেলে মুটিয়ে যায়, একথা সাধারণ্যে প্রচলিত।

কিন্তু একটি মাঝারি আকারের নুনহীন পোড়ানো আলুতে ১৬০ ক্যালোরি থাকে আর প্রাকৃতিকভাবেই তা ফ্যাট ও কোলেস্টেরল মুক্ত। প্রতিটি আলুতে ৪ গ্রাম আঁশ ও ৪ গ্রাম আমিষ থাকে। ফলে খেলে পেট ভরে যায়।

পাস্তা খেতে খেতে যাদের অরুচি ধরে গেছে তারা এক আধ দিন আলু খেয়ে মুখের স্বাদ পাল্টাতে পারেন সে কথাও বলা হয়েছে গবেষণালব্দ জ্ঞান থেকে।  

কারণ আলুতেও ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি ও আয়রন রয়েছে। আর শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পটাসিয়ামেরও দারুণ উৎস হতে পারে আলু। মাঝারি আকারের একটি আলুতে দিনের জন্য প্রয়োজনীয় মোট পটাসিয়ামের ২০ শতাংশ মিলে যায়। শরীরে রক্তের চাপের ওপর সোডিয়ামের প্রভাব কমাতে এই পটাসিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ হিসেবে কাজ করে।

আরেকটি ছোট্ট গবেষণাকে উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা সিএনএন’র হেলথ জার্নালিস্ট ও পুষ্টিবিদ লিসা ড্রায়ার তার ‘আর পটোটোজ হেলদি?’ শীর্ষক স্টোরিতে লিখেছেন, দিনে যদি অন্তত দুবার ছোট আকারের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টসম্মৃদ্ধ আটটি করে আলুও আপনি খান, তাতে ওজন বাড়ার কোনও কারণ নেই। বরং এতে রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমবে।

সাধারণভাবে বলতে গেলে, আলুর জাত ভেদে এই পুষ্টিগুনের মান, পরিমান সামান্য হেরফের থাকতে পারে। কিন্তু মিষ্টি আলু একটি বড় ব্যতিক্রম। কারণ এটি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বেটাক্যারোটিনের সবচেয়ে ভালো উৎস। এছাড়া এমন এক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা শরীরের ভিটামিন এ’র চাহিদা মেটায় এবং স্বাস্থ্যকর ত্বক ও চোখের জন্যও বেশ উপকারী।

আলু শরীরের জন্য তখনই ক্ষতিকর হয়ে ওঠে যখন তা তেলে ভাজা হয়, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ বা হ্যাশ ব্রাউনস, যে নামেই তাকে ডাকা হোক না কেনো। তেলে ভাজা হলে আলুতে ক্যালোরি, চর্বি ও সোডিয়ামের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যায়। এছাড়াও অনেকের মধ্যে প্রবণতা রয়েছে পটেটো স্যালাড-এর নামে আলুর ওপর আরও নানা ধরণের উপাদান মিশিয়ে, মাখন, টক ক্রিম কিংবা মেওনিজ মিশিয়ে খাওয়া। তাতে একই ধরণের ক্ষতি।

কিন্ত ক্রিমযুক্ত না করে, রোস্টেড বা পোড়ানো আলুর ওপর অলিভ অয়েল মিশিয়ে একটু রোজমেরি পনির সহকারে খেলে তা উপকারে আসে।  

এটা সত্য আলু উচ্চমাত্রার গ্লিসেমিক ইনডেক্স (জিআই)ভূক্ত খাবার। যেসব খাবার রক্তে শর্করার পরিমান বাড়ায়। তবে খাদ্যের পুষ্টিগুন নিয়ে এই জিআই কিন্তু শেষ কথা নয়।

আরেকটি সাম্প্রতিক গবেষণা দেখিয়েছে, খাদ্য হিসেবে আলু গ্রহণ, বিশেষ করে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ, শরীরের দুই ধরনের ডায়াবেটিস তৈরিতে ভূমিকা রাখে। আর এক্ষেত্রে মেয়েদের ঝুঁকিটা বেশি। এতে তাদের মুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। যা পোড়ানো কিংবা বেকড পটেটোতে থাকে না।

তাহলে শেষ কথা কি? সেটা হলো আলু আপনার শরীরের অন্যতম পুষ্টির উৎস ও প্রধান খাবারের একটি হবে পারে। তবে খেতে হবে সতর্কতার সাথে। কিভাবে খাদ্যটি তৈরি হচ্ছে এবং তাতে অন্য খাদ্য উপাদান কতটুকু ব্যবহৃত হচ্ছে সেটা একটা অন্যতম দেখার বিষয়। আর তাই বলে অন্য নানা বর্ণের সব্জিও কিন্তু খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যাবে না, কারণ ওগুলোও স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী।

বাংলাদেশ সময় ১৩০৯ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৭
এমএমকে  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।