ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. আফম রুহুল হক বলেছেন, বেসরকারি হাসপাতালে খুব শিগগিরই কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন শুরু হবে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে তহুরা আলীর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন বন্ধ থাকলেও তা সাময়িক সময়ের জন্য। মানব দেহ অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন-১৯৯৯ এর প্রবিধান তৈরির জন্য বর্তমানে খসড়া প্রস্তুতের কাজ চলছে। এটা প্রণয়ন হয়ে গেলে বেসরকারি হাসপাতালে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন শুরু হবে। ’
মো. তাজুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত শক্তিশালী চক্রকে নির্মূল করতে সরকার এরই মধ্যে গোয়েন্দা সংস্থার নিকট বিষয়টি হস্তান্তর করেছে। এ বিষয়ে রাজধানীর গুলশানে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া চক্রের সাথে জড়িতদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সামশুল হক চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, নকল ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত প্রতিরোধে ওষুধ প্রশাসন তৎপর রয়েছে। নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
সরকারি ওষুধ বিশ্লেষক কর্তৃক কোনো ওষুধ মান-বহির্ভূত ঘোষিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ওষুধ আদালতে মামলা এবং সংশ্লিষ্ট ওষুধের উৎপাদন ও বাজারজাত বাতিল করা হয় বলে জানান তিনি।
মোহাম্মদ ফজলুল আজিমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চলতি অর্থ বছরেই দেশের উপজেলা হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স ও এক্স-রে মেশিন সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে।
এবিএমএম আবুল কাসেমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, চিকিৎসা শিক্ষা সম্প্রসারণে সরকার বড় ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, আইএইচটি, ম্যাটস ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।
হোসেন মকবুল শাহরিয়ারের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হত দরিদ্র ও দুঃস্থদের চিকিৎসায় সরকার সহযোগিতা করছে। এখানে কোনো চার্জ নেওয়া হয় না। বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ, অপারেশন ও ৪০০ প্রকার ওষুধ সরবরাহ করা হয়। ’
বেগম ফরিদুন্নাহার লাইলী উল্লেখ করেন, দেশে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৯৬৪ জন বাস করে। অর্থাৎ প্রতি হাজার হেক্টর জমিতে ১৪ হাজার ৬৫ জন মানুষ বাস করে। এ সংখ্যা ভারতে তিন হাজার ২৫ জন এবং চীনে তিন হাজার।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে ডা. আফম রুহুল হক বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার রোধকল্পে সরকার পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মাধ্যমে ১৩টি কার্যক্রম জোরদার করেছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পরিবার কল্যাণ সহকারীর আওতায় সকল দম্পতি নিবন্ধিকরণ করা হয়েছে। স্তর ভিত্তিক দম্পতি অনুযায়ী কর্মী ভিত্তিক প্রজেকশন স্থানীয় পর্যায়ে নির্ধারণ করা হচ্ছে। ’
তিনি আরও বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক, স্যাটেলাইট ক্লিনিকের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় পরিবার পরিকল্পনাসেবা পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পরিবার পরিকল্পনা স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতির অগ্রগতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে হাওড়, বাওড় ও দুর্গম এলাকায় বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ’
পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিতে পুরুষের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্থায়ী ও দীর্ঘ মেয়াদী পদ্ধতি গ্রহীতাদের ক্ষেত্রে মজুরি, ক্ষতিপূরণ, খাদ্য ও যাতায়াত ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১১