ফিরোজা বেগম লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা রেলওয়ে কলোনীর ফজুল হকের স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ে।
স্থানীয়রা বাংলানিউজকে জানান, ফিরোজা বেগম ইএসডিও নামে একটি এনজিও থেকে ছয়মাস মেয়াদী ধাত্রী প্রশিক্ষণ নিয়ে এনজিওতে কিছুদিন চাকরি করেন।
এলাকায় ব্যাপকভাবে প্রচার প্রচারণা করে আগত রোগীদের ধাত্রী সেবার পাশাপাশি তিনি রোগীদের চিকিৎসাপত্র (প্রেসক্রিপশন) দিচ্ছেন। এ সেবা কেন্দ্রের পাশেই গরু ছাগলের থাকার জায়গা ও মলমূত্রের দুর্গন্ধ। পাশেই নলকূপের নালার দুর্গন্ধ পানি। সবমিলে থাকার অনুপযোগী এমন স্থানেই হয় নবজাতকের আঁতুর ঘর।
গত ৭ আগস্ট ওই উপজেলার দোলাপাড়া এলাকার নুরে এলাহীর স্ত্রী জেমি বেগমের প্রসব ব্যাথা উঠলে তারা ফিরোজা বেগমের মা ও শিশু সেবা কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। পরদিন একটি ছেলে বাচ্চা প্রসব করেন জেমি বেগম। বাচ্চা প্রসবের সময় আঘাত পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে জেমির সদস্য ভুমিষ্ট সন্তান। তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে নিতে চাইলে ধাত্রী ফিরোজা বেগম প্রথম দিকে রেফার করতে রাজি হননি।
নবজাতকের অবস্থার অবনতি হলে নুরে এলাহী জোরপূর্বক রেফার করে মা ও নবজাতককে প্রথমে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল পরে রংপুর মা ও শিশু হাসাপাতলে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগষ্ট ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নুর এলাহী ১৫ আগস্ট হাতীবান্ধা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
নুরে এলাহী অভিযোগ করে বলেন, ধাত্রী ফিরোজা বেগমের ভুল চিকিৎসার কারণেই তার বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি বিচার চেয়ে স্থানীয় থানায় একটি অভিযোগও করেছেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। ধাত্রী ফিরোজা বিভিন্ন কৌশলে সর্বমহলকে ম্যানেজ করে দম্ভ করে বেড়াচ্ছেন।
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমতিপত্র নেই স্বীকার করে ধাত্রী ফিরোজা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন এনজিওতে মা ও শিশু সেবা নিয়ে চাকরি করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বাড়িতে সন্তান প্রসব করে থাকি। তবে ভুল চিকিৎসায় নয় এবং ওই নবজাতক রংপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। অবৈধ গর্ভপাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. রমজান আলী বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি অবগত হয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফিরোজা বেগমের মা ও শিশু সেবা কেন্দ্র নামে কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুমতি নেই।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বাংলানিউজকে জানান, নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮
এনটি