বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের উত্তর পাশে এই সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের ১১ তলা ভবন নির্মিত হবে। বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে দেশে সেন্টার বেইজড চিকিৎসা সেবা চালু করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে উন্নীত করার এ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টার, ডায়াগনস্টিক ও অনকোলজি ভবন এবং ডক্টরস’ ডরমেটরিরও উদ্বোধন করেন।
জনগণের জন্য বিশেষায়িত সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ১ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি নির্মাণের প্রকল্প গৃহীত হয়।
কারিগরি সহযোগিতার পাশাপাশি কোরিয়া সরকার হাসপাতালটি নির্মাণে সহজ শর্তে প্রায় ১ হাজার ৪৭ কোটি টাকার সহায়তা করছে। এই হাসপাতালে প্রথমবারের মতো সেন্টার বেইজড হেলথ কেয়ার ডেলিভারি সিস্টেম চালু হবে।
হাসপাতালটিতে প্রত্যেকটি সেন্টারের জন্য নির্দিষ্ট বহির্বিভাগ চালু থাকবে। এখানে প্রতিদিন বর্হিবিভাগে সেবা নেবেন ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার রোগী।
ইমার্জেন্সি মেডিকেল কেয়ার সেন্টারটি দিনরাত ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা দিতে সক্ষম হবে। অত্যাধুনিক সার্জারিসহ থাকবে লিভার ও কিডনি ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট সুবিধা।
হাসপাতালের অর্ন্তবিভাগে প্রতিবছর ২২ হাজার রোগী চিকিৎসা নিতে পারবেন। এতে দেশের বাইরে সাধারণত চিকিৎসার জন্য যে ৩০০-৪০০ কোটি টাকা চলে যায়, তা সাশ্রয় হবে।
এর তথ্য সিস্টেম এবং হাসপাতাল পরিচালনা হবে সম্পূর্ণ ডিজিটালি। ভিআইপি ও ভিভিআইপি কেবিন থাকবে হাসপাতালটিতে।
প্রকল্পের আওতায় প্রথম ফেজে দুইটি বেইজমেন্টসহ ৯ তলা হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হবে। দ্বিতীয় ফেজে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে পরবর্তী দুই তলা নির্মাণ করা হবে।
১১ তলা হাসপাতাল ভবনটিতে থাকবে মোট ১০০০ শয্যা। দেশের প্রথম সেন্ট্রাল বেইজড চিকিৎসা সেবা চালু হবে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটিতে। সেন্টার বেইজড চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে বিশেষায়িত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
নবনির্মিত হাসপাতালের প্রথম ফেজে থাকবে ইমার্জেন্সি মেডিকেল কেয়ার সেন্টার, মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ কেয়ার সেন্টার, কার্ডিয়াক অ্যান্ড সেলুলার ভাস্কুলার সেন্টার, হেপাটোবিলিয়ারি অ্যান্ড গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি সেন্টার, কিডনি ডিজিজেস সেন্টার।
দ্বিতীয় ফেজে থাকবে অপথ্যালমোলজি সেন্টার, ডেন্ট্রিস্টি, ডার্মাটোলজি, মেডিসিন, সার্জারি বিভাগ সমূহ।
নবনির্মিত সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি হবে রোগীবান্ধব একটি সবুজ হাসপাতাল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ হাসপাতাল দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য নিশ্চিত করবে সর্বোচ্চ মানের স্বাস্থ্য সেবা। আধুনিক স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিতব্য হাসপাতালটিতে রাখা হয়েছে সবুজ আরোগ্য উদ্যান ও সোলার প্যানেলও। সুপার স্পেশালাইজড এ হাসপাতাল স্বাস্থ্য সেবার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠান মঞ্চে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব জি. এম. সালেহ উদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮
এমইউএম/এইচএ/